করোনা ছোবলে ভাটা রাজশাহীতে বর্ষবরণের উৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ পহেলা বৈশাখ। বাঙালীর প্রাণের উৎসব বলা হলেও, বৈশাখ আজ প্রাণহীন। শুধু বাংলা ক্যালেন্ডারের রিতি অনুযায়ি বছরের প্রথম দিন এটি। নেই বর্ষবরণের কোন আয়োজন। প্রতিবছর বর্ষবরণে উৎসব হলেও এবছর করোনার কারণে ভাটা পড়েছে। তাই নেই উৎসব, নেই মেলা, নেই কোন আয়োজন। এবছর অনেকটাই নিস্তব্ধ বৈশাখ পালন করবে বাঙালী জাতি। মহামারি করোনার কারণে এবছর বৈশাখ পালনে নেই আড়ম্বরে।

প্রতিবছর বৈশাখে বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে নানা আয়োজন থাকে। চৈত্র সংক্রান্তির মধ্যদিয়ে শুরু হয় বৈশাখের আয়োজন। যদিও বৈশাখের আগের দিন চৈত্র সংক্রান্তি। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নানা আয়োজনের মধ্যে নাচ-গান, পিঠা মেলাও হয়ে থাকে।

তবে রাজশাহীতে বেশ বড় পরিসরে বর্ষবরণের আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। দিনটিতে শোভাযাত্রার আয়োজন থাকে রাজশাহী কলেজের। আর পদ্মা পাড়ে বাড়ে দর্শনার্থীদের ভীড়। সবমিলে দিনভর চলে নানা আয়োজন। কেউ কেউ বিক্রি করেন পান্থা ইলিশও। বাড়ি বাড়ি থাকে অতিথি আপ্যায়নের পালা। শুধু তাই নয়, দোকানে দোকানে হালখাতার আয়োজনে পড়েছে ভাটা।

এবছর বৈশাখ উৎযাপনের নেই কোন আয়োজন। গতবছর বৈশাখের আগের দিনে ব্যস্ততায় মেতে ছিলো চারুকলার শিক্ষার্থীরা। এবছর উল্ট চিত্র। গতকাল সোমবার বিকেলে সরেজমিনে রাবির চারুকলায় গিয়ে দেখা যায়, প্রাণহীন চারুকলা। পুরো চারুকলা ফাঁকা। নেই সাজ সজ্জা। সবকিছু এলোমেলো। কোন শিক্ষার্থীদের দেখা মেলেনি। করোনা ভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সবাই ফিরেছে বাড়ি। তাই বৈশাখের আয়োজনের প্রাণভ্রমরা শিক্ষার্থীরা নেই ক্যাম্পাসে।

যদিও বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা তিনমাস আগে প্রাচীরে চিত্র অঙ্কন করেছিলো। সেই চিত্রগুলো উদ্বোধন হলো না এবছর।

অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়। বৈশাখকে বিভিন্ন কাপড় বিক্রি বারে। এছাড়া বিক্রি হয় ফুলো। এবছর বৈশাখকে ঘিরে যে ব্যবসাগুলো ছিলো তার সবই বন্ধ। অনেকেই বৈশাখের কাপড় কিনে বিক্রি করতে পারছেন না এমনটি জানাচ্ছেন অনেকেই।

এদিকে, করোনা ভাইরাসের কারণে সব নাগরিককে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করে ‘বাংলা নববর্ষ বরণ’ উদযাপন করার জন্য আহবান জানিয়েছে রাজশাহী জেলা পুলিশ।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বলেন, করোনা ভাইরাসে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ‘বাংলা নববর্ষ বরণ’ পহেলা বৈশাখে বাইরে কোনো ধরনের গণজমায়েত না করে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করে উদযাপনের জন্য বলেছেন। পাশাপাশি সচেতনার সঙ্গে হোম কোয়ারেন্টাইন ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য সকলকে বলা হয়েছে।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মুহা. হবিবুর রহমান বলেন, চত্রসংক্রান্তি চলে গেলো। এদিনে গত বছর নানা আয়োজন ছিলো কলেজে। এবছর করোনার কারণে বৈশাখেও কোন আয়োজন থাকছে না। এ সঙ্কট মোকাবেলায় আমাদের সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। সামর্থ মতো অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে হবে।

 

স/আ