করোনার জেরে ব্রিটেনের মসজিদ চিরদিনের জন্য বন্ধের শঙ্কা

করোনাভাইরাসের প্রকোপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যুক্তরাজ্যের কিছু মসজিদ চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এদিকে ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিল বলেছে, যেসব মসজিদ জনগণের অর্থায়নে চলে এবং যেসব মসজিদে মানুষজন উপস্থিত হলে অর্থ সহায়তা করে, করোনাভাইরাসের কারণে সেগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এসব মসজিদ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে।

এদিকে রমজান মাস উপলক্ষে সচরাচর অন্য বছরে মসজিদে ব্যাপক মুসল্লির আগমণ ঘটে। করোনাভাইরাসের জেরে এ বছর মসজিদ একেবারে ফাঁকা।

ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক হারুন খান বলেছেন, মসজিদগুলো বড় ধরনের ধাক্কা পাবে। বেশিরভাগ মসজিদ চলে দাতব্য সংস্থার অর্থায়নে। এর বাইরে মুসল্লি থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের অর্থায়নে মসজিদগুলো পরিচালিত হয়।

তিনি আরো বলেছেন, এ দেশের বেশিরভাগ মসজিদে যেসব ইমাম এবং মুয়াযযিন আছেন, তাদেরকে বেতন দিতে হয়। অন্য কর্মচারীদের বেতনও দেওয়া হয় জনগণের দেওয়া অর্থ থেকে। এ বছর করোনাভাইরাসের জেরে মসজিদে দানের হার তলানিতে নেমেছে। বলা চলে, এটা বড় ধরনের সঙ্কটপূর্ণ মুহূর্ত।  এ ধরনের সমস্যা এর আগে আসেনি।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, রমজান মাস উপলক্ষে মসজিদে মুসল্লিদের সংখ্যা বেড়ে যায়। অন্য সময়ের তুলনায় নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদতও বেড়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে সবাইকে। এছাড়া লকডাউনের প্রভাবে মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যা বহু বছর ধরে চলে আসা রীতি-নীতির ওপর প্রভাব ফেলবে।

যুক্তরাজ্যে দুই হাজারের বেশি মসজিদ আছে। অন্তত ৩০ লাখ মুসলিম এসব মসজিদে নামাজ আদায় করেন। বিশেষ করে রমজান মাসে এসব মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি বাড়ে।

ব্রিটেনের মসজিদ কল্যাণ সমিতির প্রধান সেলিম আহমেদ বলেন, এটা বিস্ময়ের হলেও মসজিদে আসাটা আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু আমরা দেশীয় আইন মেনে চলছি। রমজান মাসে সামাজিকভাবে একটা ভ্রাতৃত্ব তৈরি হয়। এখন সেটা বন্ধ আছে। ভবিষ্যতে সেই দূরত্ব আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ম্যাট হেনকক বলেন, এই রমজান মাসে যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে কর্মরত আছেন, তারাও অন্য বছরের ন্যায় ধর্মীয় নিয়ম মানতে পারবেন না।

তিনি আরো বলেন, বাড়িতে অবস্থানের কারণে ব্রিটেনের সকল মুসলিমকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি জানি যে, মুসলিমদের জন্য ইফতার, তারাবীহ ও রমজানের গুরুত্ব কতটা। একসঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়ার গুরুত্বও জানি। রাতের নামাজ এবং ঈদের ব্যাপারেও জানি; তবে এই অভ্যাসে পরিবর্তন নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ। আমি সবাইকে রমজান মোবারক বলতে চাই। আপনাদের ত্যাগের জন্য ধন্যবাদ।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ