করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে একই পরিবারের তিন জন নতুন করে আক্রান্ত, সবাই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশে আরো ৩ জনের মধ্যে করোনাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ালো ১৭ জন।

মৃতের সংখ্যা আর বাড়েনি। আগের তথ্য অনুযায়ী একজনই রয়েছে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা।

স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে দুজন পুরুষ। একজন নারী। নারীর বয়স ২২। পুরুষদের একজনের বয়স ৬৫, অপরজন ৩২।

তিনজনই একই পরিবারের সদস্য।

এরা সবাই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত। তবে তারা ইটালিফেরত প্রবাসীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন যিনি আগেই আক্রান্ত হয়েছেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি

৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। সেসময় তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার তথ্য জানায় আইইডিসিআর।

এরপর ১৪ই মার্চ শনিবার রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরো দু’জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার তথ্য জানান।

পরবর্তীতে সোমবার তিনজন এবং মঙ্গলবার আরো দু’জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার তথ্য জানানো হয়।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তির মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করা হয়।

পাশাপাশি বুধবার আক্রান্ত চারজনের তথ্যও জানানো হয়।

আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয় আক্রান্তদের সবাই বিদেশফেরত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছিলেন।

‘কোয়ারেন্টিনের শর্ত না মানলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান’

বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসা মানুষদের সরকারের ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কোয়ারেন্টিন করার নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই সেই শর্ত মানছেন না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

“যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের সেল্ফ কোয়ারেন্টিনে থাকার উপদেশ দিয়েছি আমরা। পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথেও এর গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেছি। কিন্তু আমরা বিভিন্ন সূত্র্র থেকে খবর পেয়েছি যে অনেকেই তা মানছেন না।”

আবুল কালাম আজাদ বলেন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের চলাফেরা এবং সামাজিক মেলামেশা সীমিত করা গেলে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

তিনি জানান প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে যেন জাতিকে রক্ষা করার জন্য ভূমিকা পালন করে, সেই আহ্বান জানিয়ে বার্তা প্রকাশ করা হবে।

“যদি কেউ কোয়ারেন্টিনের শর্ত না মানেন, তাহলে তার খবর যেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়

নতুন করে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের সব অঞ্চলের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে তাদের করণীয় সম্পর্কে অবহিত করে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

“দেশের সকল জেলা প্রশাসক, মেয়র, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাছে কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে তার পাশাপাশি এই অবস্থায় তাদের কর্তব্য সম্পর্কে জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।”

এছাড়া কিছুদিনের মধ্যে ১ লাখের বেশি করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কিট দেশে আসবে বলে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক।

“আজই ২ হাজার কিট এসেছে। অতিসত্ত্বর আরো কিট আসবে।”

তবে আইইডিসিআরের বাইরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত জানানো হলেও পরীক্ষা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগের তত্বাবধানেই পরিচালিত হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

সমস্ত জায়গায় বিনা প্রস্তুতিতে এই পরীক্ষা সম্প্রসারণ করা যাবে না। কারণ যথাযথ প্রস্তুতি না থাকলে যেই হাসপাতালে পরীক্ষা করা হবে সেখানকার চিকৎিসিক, কর্মচারী থেকে শুরু করে ঐ হাসপাতালে আসা সব রোগীর জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।”

তবে ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগেও এই পরীক্ষার সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানান তিনি।

“বরিশাল বিভাগ বাদে বাংলাদেশের সব বিভাগে এই ধরণের পরীক্ষা করার সামর্থ্য আছে।”

আবুল কালাম আজাদ জানান আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর ছাড়াও ফেসবুকের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত তথ্য ও অভিযোগ জানাতে পারবে মানুষ।

এরকম পরিস্থিতিতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের উপনির্বাচন সহ যে কোনো ধরণের নির্বাচন বাতিল করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক।