কমে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আমদানি

কামাল হোসেন, চাপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাই নবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে হঠাৎ করে কমে গেছে।ভারতীয় গরু আমদানি । এর ফলে আসন্ন পবিত্র কোরবানির ঈদে গরুর দাম বাড়বে বলে একাধিক গরু ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।

 
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্তে ভারতীয় গরু আনা-নেওয়া ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিট এবং ভারতীয় গরু করিডরের মাধ্যমে ছাড়পত্র নিয়ে নিয়ে খাটাল প্রথা চালু করে। এর অংশ হিসেবে চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদরের বাখরআলী, জহুরপুরটেক, বকচর এবং শিবগঞ্জের ওহেদপুর ও মাসুদপুর, গোমস্তাপুরের বিভিষণ বিওপির অধীনে বিট বা খাটালের অনুমতি দেয়। ইতোমধ্যে নতুন করে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জহুরপুর বিওপির অধীন আবদুস সামাদকে বিট স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে।

 

এদিকে ঈদুল ফিতরের আগে বকচর ছাড়া জহুরপুরটেক ও বাখর আলী বিট দিয়ে প্রচুর পরিমাণ গরু এসেছিল। কিন্তু ঈদের পর একেবারে গরু আসা বন্ধ হয়ে পড়ে।

 

কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী জানান, প্যাডের মাধ্যমে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা গরু দিতে চাইলেও সীমান্তে বিজিবির কৌশলগত কারণে তেমন গরু আসছে না।

 

গরু ব্যবসায়ী রুহুল আমিন জানান, ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীরা প্যাডের মাধ্যমে আসা জোড়া গরু প্রতি ৩৫ হাজার টাকার স্থলে ৪৫ হাজার টাকা করায় অনেকেই গরু আনছে না। পাশাপাশি পদ্মায় পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং ২টি নদীতে গরু পারাপারে ঝুঁকি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণেও গরু আনতে আগ্রহ হারাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

 

আরেক গরু ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে বেশিরভাগ বিটগুলোর আশপাশের রুটগুলো ডুবে যাওয়া এবং নদী বড় হয়ে যাবার কারণে জহুরপুরটেক ও বাখরআলী বিট দিয়ে গরু আনতে খরচ বেশি পড়ছে। তবে সদর উপজেলার আলাতুলি ইউনিয়নের বকচর বিওপির অধীন এ বিটের রুট শুকনো থাকার পরও এই বিট দিয়ে গরু আসছে না।

 
শিবগঞ্জের মনাকষা হাটের ইজারাদার মোজাম্মেল হক জানান, দেশি গরু কম হওয়ার কারণে সিংহভাগ ভারতীয় গরু এ হাটে স্থান পায়। সেক্ষেত্রে গরু এলে ক্রেতারা স্বাভাবিক দামে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায়।

 
বাখরআলী গরু বিট মালিক আমানুল্লাহ্ বিশ্বাস সিল্কসিটি নিউজকে জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ও গরু আনার পথগুলো ডুবে যাবার কারণে গত ১ মাস ধরে গরু আসছে না। এ কারণে দেশি গরুর দাম বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। তর্তিপুর হাট ইজারাদারের প্রতিনিধি হিটুল জানান, কোরবানির আগে আগে প্রতিবছরই জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আমদানি হয় এবং এসব গরু আমদানির কারণে হাটে গরুর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকে। কিন্তু এবার ভারতীয় গরু আসার পরিমাণ কমে যাওয়ায় হাটগুলোতে দেশি গরুর দাম আকাশচুম্বী হবে বলে তিনি মনে করেন।

 
এ ব্যাপারে ৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুল এহসান সিল্কসিটি নিউজকে জানান, ভারতীয় গরু আসার সময় যাতে অবাধে অস্ত্র, মাদক, বিস্ফোরক না আসতে পারে সেদিক বিবেচনা করে সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তবে নিয়ম-কাযনুন মেনে গরু আসার ব্যাপারে তাদের করারোপ নাই। সম্প্রতি এবিষয়ে গরু চোরাচালান দমন এবং সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও মালিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন।
স/শ