কবিরাজের ভন্ডামিতে অতিষ্ঠ সাপাহারবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁর সাপাহার উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নে ভন্ড কবিরাজ দুলাল মৌলভীর ভন্ডামিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। দিন দিন তার ভন্ডামির মাত্রা বেড়েই চলেছে। সর্বশান্ত হয়েছে কয়েকটি পরিবার। কবিরাজ দুলাল মৌলভী উপজেলার নিশ্চিন্তপুর মোড়ে হঠাৎপাড়ার দুখুমিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, কবিরাজ দুলাল কওমী মাদ্রাসায় পড়াশুনার পাশাপাশি নিজকে জ্বীনের কবিরাজ দাবী করে বিভিন্ন স্থানে কয়েকমাস আগ থেকে ঝাঁড় ফুক দিয়ে আসছিল। কিছু দিন পূর্বে উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নে নিশ্চিন্তপুর মোড়ে চা দোকানী ইউনুস আলীর সাথে ঘনিষ্ঠতা হয়। তার গ্রামের বাড়ী উপজেলার খঞ্জনপুর গ্রামে। আত্মীয়তার সূত্রে ২০দিন পূর্বে দুলালের বাড়ীতে ইউনুস আলীর মেয়ে শিশু রিনা আক্তার (১১) ও তার ছোট ভাই বেড়াতে আসে। রাতের কোন এক সময় কবিরাজ দুলাল শিশু রিনা আক্তারকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। সকালে রিনার বাবা-মাকে ডেকে বলে রাতে রিনাকে জ্বীনে নিয়ে গেছে। তাকে ফেরত পেতে হলে এ কথা কাউকে বলা যাবেনা। তাহলে দু’দিনের মধ্যেই রিনার বাবা ইউনুস আলী মারা যাবে।

রিনাকে ফেরত পেতে হলে অনেক টাকা লাগবে বলে কবিরাজ দুলাল তাদেরকে জানায়। মেয়েকে ফেরত পেতে তারা বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) থেকে কয়েক দফায় প্রায় ৯৬ হাজার টাকা কবিরাজ দুলালের হাতে দেয়। এরপরও মেয়েকে ফেরত না পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাক-বিতন্ড হলে বিষয়টি প্রকাশ পায়।

এরপর স্থানীয় লোকজন কবিরাজ দুলাল মৌলভীকে বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করলে গত ১৬/০২/১৮ তারিখে শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে শিশু রিনা আক্তারকে তার মা-বাবার কাছে পৌছে দেয় কবিরাজ দুলাল মৌলভী। ইতোপূর্বে ভন্ড কবিরাজ দুলাল ওই গ্রামের অনেকের সাথে ভন্ডামী করে প্রতারণা করে টাকা আতœসাত করেছে বলেও অভিযোগ আছে। এমনকি এক গৃহবধুকে টাকা দ্বিগুন হওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রথমে ১০হাজার টাকা নিয়ে পরে ২০ হাজার টাকায় রুপান্তর করে দেয়। পরবর্তীতে ওই গৃহবধুর কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছে।

এ বিষয়ে ভন্ড কবিরাজ দুলাল পলাতক থাকায় তার তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় গোয়ালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, কবিরাজ দুলাল ভন্ড কিনা জানিনা। তবে শিশু রিনা আক্তারকে লুকিয়ে রেখে তারা বাবা-মার সাথে যে প্রতারণার করা হয়েছে তার সত্যতা আছে। বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুুল আলম শাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স/শ