কত টাকা মুক্তিপণ দিতে হলো ২৩ নাবিকের জন্য?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

মুক্তিপণ নিয়ে সোমালিয়ার উপকূল থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে ছেড়ে দিয়েছে সোমালি জলদস্যুরা। নানা দেন-দরবার শেষে শনিবার সোমালিয়ার সময় দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে দস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে তীরের দিকে চলে যায়।

জাহাজ ছিনতাইয়ের পর থেকে দস্যুদের মুক্তিপণের বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল। তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে জলদস্যুরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগও করে। কিন্তু নাবিকদের ছাড়াতে মুক্তিপণ লেগেছে কিনা, কিংবা কী পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে তারা ছাড়া পেয়েছেন, সে সম্পর্কে সরকার কিংবা জাহাজের মালিকপক্ষের কেউ কথা বলেননি।

তবে নাবিকদের মুক্তির কয়েক ঘণ্টা পর দুজন জলদস্যুর বরাতে ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণের কথা লিখেছে রয়টার্স। সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোও একই পরিমাণ মুক্তিপণের খবর দিয়েছে।

আবদিরশিদ ইউসুফ নামে এক জলদস্যু রয়টার্সকে বলেন, দুই রাত আগে আমাদের কাছে ওই অর্থ নিয়ে আসা হয়…। সেগুলো আসল নাকি ভুয়া তা আমরা যাচাই করে দেখেছি। এরপর তা আমরা ভাগবাটোয়ারা করে সরকারি বাহিনী এড়িয়ে চলে যাই।

মুক্তিপণ হাতে পাওয়ার পরই জাহাজসহ সব নাবিককে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান রশিদ। তবে বিষয়টি নিয়ে সোমালিয়া সরকারের কোনো বক্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স।

বাংলাদেশি নাবিকদের ছাড়াতে ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণের কথা বলেছে সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোও। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে দ্য ডেইলি সোমালিয়া ও গারও অনলাইন নামে দুটি সংবাদ মাধ্যম তাদের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছে, ৫০ লাখ ডলারের বিনিময়ে বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের ছেড়ে দিয়েছে দস্যুরা।

মুক্তিপণের বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষ এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম।

রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে কবির গ্রুপের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সোমালিয়া এমনকি কেনিয়ার মেরিটাইম আইন মেনে কাজ করেছি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করেছি। সমঝোতার শর্ত অনুসারে অনেক বিষয় প্রকাশ করতে পারব না আমরা।

মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে দস্যুদের কবলে পড়েছিল জাহাজটি। জিম্মি হওয়া ২৩ নাবিকের সবাই ছিলেন বাংলাদেশি।

অস্ত্রের মুখে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। সেখানে পৌঁছানোর পর বারবার জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। ছিনতাইয়ের নয় দিনের মাথায় জলদস্যুদের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় জাহাজের মালিকপক্ষের। এরপর নানা দেন-দরবার শেষে তারা মুক্তি পেলেন।

মুক্তির পর এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়া থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা করেছে বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে।

কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ভোর রাত ৩টার দিকে রওনা করেছে। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন।