কক্সবাজারে পর্যটককে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য

স্বামী-সন্তানসহ এক নারী ঘুরতে গিয়েছিলেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। সেখান থেকে তার স্বামীকে জিম্মি করে তুলে নিয়ে দুই দফায় গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অপরদিকে পর্যটককে গণধর্ষণের ঘটনায় ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করেছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল এসপি) মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে অনেক ‘রহস্য’ পাওয়া যাচ্ছে। তার বক্তব্যের সঙ্গে স্বামীর বক্তব্যের মিল নেই। পাশাপাশি এই গৃহবধূ গত কয়েক মাসের মধ্যে কক্সবাজার বেশ কয়েকবার এসেছেন। সুতরাং তাকে প্রাথমিক দৃষ্টিতে পর্যটক বলা যাচ্ছে না। কারণ এই মহিলা বারংবার কক্সবাজার আসার পেছনে অন্য রহস্য লুকিয়ে আছে।

তবে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, কক্সবাজার শহরের লাবনী পয়েন্ট থেকে তুলে নিয়ে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে দুই দফা সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে তিন যুবক। প্রথমে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে তিনজন। পরে ওখান থেকে হোটেল জিয়া গেস্ট ইনে তোলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুমের বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ধর্ষণকারীরা।

এরপর জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খুলেন তিনি। তারপর ফোন দেন পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯ নম্বরে। পুলিশ তাকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার না করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। এরপর র‌্যাবকে ফোন করে জানালে র‌্যাব ১৫-এর একটি টিম এসে তাকে উদ্ধার করে। তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠ এলাকা থেকে।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে স্বামী-সন্তান ও গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকেই শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও মামলার আসামি হোটেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কক্সবাজার সদর থানার মাধ্যমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে সোপর্দ করা হবে।

শনাক্তরা হলেন- কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার মৃত আবদুল করিমের ছেলে আশিকুল ইসলাম (২৩) ও মোহাম্মদ শফিক ওরফে গুন্ডা শফির ছেলে ইসরাফিল হুদা জয়।তবে অন্যজনের পরিচয় জানাতে পারেনি র‌্যাব। তবে অন্যজন আবুল কাসেমের ছেলে মেহেদী হাসান বাবু ওরফে গুন্ডায়া বাবু বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কক্সবাজারে পর্যটক ধর্ষণের প্রসঙ্গে শুক্রবার বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্খিত, দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

কাপাসিয়ার তরগাঁও ইউনিয়নের লাহুরি গ্রামে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী পৌষ মেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।

 

সূত্রঃ যুগান্তর