বুধবার , ২৮ মার্চ ২০১৮ | ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ওয়ার্নারই ‘নাটের গুরু’

Paris
মার্চ ২৮, ২০১৮ ১২:৪১ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সময় যত এগোচ্ছে পরিস্থিতি ততটাই যেন ঘোলাটে হয়ে উঠছে। আর এরই মধ্যে নতুন এক বোমাই ফাটালো অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ড। তাদের দাবি গোটা বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির হোতা হলেন টেস্ট দলের সদ্য সাবেক হওয়া সাবেক অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার।

গণমাধ্যমটির দাবি,  ডেভিড ওয়ার্নার টিম ম্যানেজমেন্টকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করেছেন। আর আগাম শাস্তি এরই মধ্যে পেয়ে গেছেন তিনি। কারণ, ক্রিকে অস্ট্রেলিয়া জোহানেসবার্গে স্টিভেন স্মিথের সাথে সাথে ওয়ার্নারকেও বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। দলে ডাকা হয়েছে ম্যাচ র্যানশোকে। সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার পরই দল থেকে জায়গা হারিয়েছিলেন তিনি।

অন্যদিকে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের দাবি, অ্যাশেজেও ওয়ার্নার জড়িত ছিলেন বল টেম্পারিংয়ে। তারা বলছে, ব্যাটিংয়ের সময় না হলেও ফিল্ডিংয়ের সময় হাতে বিশেষ এক ধরনের টেপ পরে নামেন ওয়ার্নার। তাদের সন্দেহ বল টেম্পারিংয়ের জন্যই তিনি এমন করেন। আর একই রকম টেপ কেপটাউন টেস্টেও তার হাতে দেখা গিয়েছিল। ফলে, ওয়ার্নারের বিরুদ্ধে সন্দেহটা ক্রমেই প্রবল হচ্ছে।

কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন বল টেম্পারিংয়ের ঘটনা ঘটান অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ক্যামেরন ব্যাক্রফট। ফিল্ডিং করার সময় হলুদ রঙের একটি শিরিষ কাগজ জাতীয় বস্তু দিয়ে বলের উপর ঘঁষা দেন ব্যানক্রফট। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ আনে ম্যাচ পরিচালনাকারীরা। সেই অভিযোগ স্বীকার করে নেন স্মিথ। টেলিভিশন ক্যামেরায় স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর আসলে তার অস্বীকার করার কোনো উপায়ও ছিল না। ওই দিনের খেলা শেষ হবার পর স্মিথ জানান, ‘বল টেম্পারিংয়ের সিদ্ধান্তটা দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের সাথে আলাপ আলোচনা করেই করা হয়েছে।’ আর এই সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন ডেভিড ওয়ার্নার।

মিশেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড কিংবা দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলা নাথান লিঁও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) বারবারই বলে এসেছেন বল টেম্পারিং পুরোপুরি লিডারশিপ গ্রুপের সিদ্ধান্ত। ড্রেসিংরুমের ঘনিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, মূল পরিকল্পনাটি ব্যানক্রফটকে সাথে নিয়ে করেছিলেন ওয়ার্নার। পরে স্টিভেন স্মিথ তাদের প্রস্তাবে রাজি হন। ওই সূত্রই জানিয়েছেন, দলের বাকিরা তাই আর ওয়ার্নারের সাথে খেলতে চায় না।

টেস্ট শেষ হতে না হতেই সতীর্থদের সাথেও আর বনিবনা হচ্ছে না ওয়ার্নারের। ক’দিন আগেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। খেলোয়াড়দের সাথে তার বোঝাপড়াটা তাই ভালই হওয়ার কথা। অথচ সেই ওয়ার্নারই কি না এবার নিজের মেজাজ হারালেন। তার ওপর খেলোয়াড়রা বিশেষ করে ফাস্ট বোলাররা এতই ক্ষেপে গেছেন যে, তাকে দল থেকে আজীবন  নিষিদ্ধ করারও দাবি রেখেছে। টিম হোটেলে ওয়ার্নারকে একরকম বয়কটই করে রেখেছে সবাই। এমনকি ডাইনিং টেবিলেও ওয়ার্নারকে একাই পাওয়া যাচ্ছে। সদ্যই তিনি নিজেকে দলের হোয়াটস্যাপ গ্রুপ থেকেও ‘রিমুভ’ করে রেখেছেন।

জোহানেসবার্গে দলের সাথে আছেন সিএ’র প্রধান নির্বাহী জেমস স্যাদারল্যান্ড, হেড অব ইন্টেগ্রিটি ইয়ান রয় ও সিএ’র টিম পারফরম্যান্স বিষয়ক নির্বাহী জেনারেল ম্যানেজার প্যাটহাওয়ার্ড। তারাই এখন দলের ভিতর-বাহির নিয়ন্ত্রণ করছেন। বলাই বাহুল্য, এরই মধ্যে তদন্তও শুরু করে ফেলেছেন তারা।

আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ না হলেও, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুমে ডেভিড ওয়ার্নারের থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তার বয়স এখন ৩১। শিগগিরই পা রাখবেন ৩২। একটু আগে ভাগেই তাই ব্যাগি গ্রিনটা ছেড়ে দিতে হচ্ছে ওয়ার্নারকে, নিজের দোষেই!

এমন ‘অশান্তি’র মধ্যেই জোহানেসবার্গে আগামী ৩০ মার্চ থেকে সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্ট খেলতে নামতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। এর আগে এই বল টেম্পারিং ইস্যুতে আরো যে অনেক জল ঘোলা হবে সেসব আর না বলে দিলেও চলে। সিরিজের ফলাফল যাই হোক না কেন, ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত টেস্ট সিরিজ হিসেবেই এটা বিবেচিত হয়ে থাকবে। কে জানে, হয়তো এরই মধ্যে আরো বড় কোনো নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে বসবে স্বয়ং সিএ!

ইত্তেফাক

সর্বশেষ - খেলা