রাণীনগরে বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই চলছে ব্রিজ নিমার্ণ, ভোগান্তি

রাণীনগর প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর রাস্তায় ঝুঁকিপূর্ণ হাতিরপুল ব্রিজ না ভেঙ্গে এবং বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই পাশে নতুন ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর দিয়ে যান চলাচল করার সময় যে কোন মহুর্তে ধ্বসে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশংকায় ইতোমধ্যে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন নিয়ে চলাচলকারী মানুষ। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, ব্রিজটি খালের উপর হওয়ায় বিকল্প রাস্তা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চলমান নির্মানাধীন ব্রিজের কাজ শেষ করা হবে।

ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির মাঝখানে দেবে গিয়ে হেলে পড়ায় এবং ফাটল ধরায় দুর্ঘটনার আশংকা আর ঝুঁকি নিয়ে চলছে ছোট যানবাহনগুলো। ব্রিজটি ভেঙ্গে গেলে রাণীনগর ও নওগাঁ জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, রাণীনগর-আবাদপুকুর রাস্তার রাণীনগর সদর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে একটি খালের উপর ব্রিটিশ আমলে চুন-সুরকি দিয়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ব্রিজটি হাতির পিঠের ন্যায় আকৃতি হওয়ায় হাতিরপুল ব্রিজ নামে পরিচিতি লাভ করে। এক সময়ের কাঁদা-মাটির রাস্তা পাকাকরণ হলেও ব্রিজটি বহাল রাখা হয়। অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচল করায় দীর্ঘদিন আগের ব্রিজটির মাঝখানে দেবে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধ্বরে হেলে পরে। বছর খানেক আগে ব্রিজটি কোনো রকমে সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হয়। ইতোমধ্যে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতায় রাণীনগর থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা আরো প্রশস্ত ও পূনরায় পাকাকরণ এবং ৪টি ব্রিজ ও ২৬টি কালভার্ট নির্মাণকাজের টেন্ডার হয়। এরপর রাস্তায় ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের জন্য করজগ্রাম, খানপুকুর, আমগ্রামের মোড়সহ কয়েকটি স্থানে যানবাহন চলাচলে বিকল্প রাস্তা তৈরি করে কাজ শুরু করা হয়েছে।

কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হাতিরপুল ব্রিজের পাশে নতুন ব্রিজের কাজ শুরু করলেও এখনো ওই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলা কিংবা বিকল্প রাস্তা তৈরির কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ইতোমধ্যে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে নওগাঁ জেলা সদরে পৌছতে ভারী যানবাহনগুলোকে ১১ কিলোমিটার রাস্তার পরিবর্তে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন সময় ব্যয় হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবহন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে কৃষিপণ্য ও ব্যবসার মালামাল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ট্রাকচালক মিরাজুল ইসলাম, শাহাজান আলী, ময়নুল হাসানসহ আরো অনেকেই জানান, এই একটি মাত্র ব্রিজের কারনে সময় আর টাকা দু’টোই ব্যয় হচ্ছে। ব্রিজের পাশ দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরি করলে একদিকে যেমন সময় কম লাগতো। অন্যদিকে পরিবহন খরচাও কমে আসতো।

পথযাত্রী জামাল হোসেন, আতিকসহ আরো অনেকেই জানান, হাতিরপুল ব্রিজের বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়া ব্রিজটি ভেঙ্গে গেলে রাণীনগরসহ জেলা সদরের সাথে পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই নতুন ব্রিজ দ্রুত নির্মাণ অথবা ব্রিজটির পাশ দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরির দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল মুনছুর আহমেদ বলেন, হাতিরপুল ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ব্রিজটি খালের উপর হওয়ায় বিকল্প রাস্তা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চলমান নির্মানাধীন ব্রিজের কাজ শেষ করা হবে।

স/শা