ঐতিহ্য ধরে রাখতে বর্ষবরণে রাজশাহীতে ৩ ঘোড়াতেই ঘোড়দৌড়

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পাকিস্তানি আমলের আগে ও পরে রাজশাহীর মানুষের জানমাল পরিবহনের একমাত্র উপায় ছিল ঘোড়ার গাড়ী। এক সময় টমটম বা ঘোড়া গাড়ীর নগরী বলে ব্যাপক পরিচিত ছিলো রাজশাহী। সব মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার টমটম ওই সময় দাপিয়ে বেড়াতো রাজশাহী-নাটোরসহ আশপাশের এলাকায়।

তবে কালের বিবর্তনে এখন চিত্রটি বদলে গেছে। প্রায় সাতশো ঘোড়ার মধ্যে এখন রাজশাহীতে বাকি রয়েছে মাত্র চারটি। কিন্তু সেগুলোও এখন প্রায় রোগাটে। এ ঘোড়াগুলো এখন কেবল সড়কে মালামাল বহন করে। আর কালেভদ্রে বিভিন্ন শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। যাকে বলা যায় কোনোমতে ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা।

 

তাই বর্ষবরণ উপলক্ষে রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে তিনটি ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। শেষ পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় আর তৃতীয় হয়ে করা হয় তাদের মধ্যে থেকেই। তাই পুরস্কৃত হন তিনজনই।

প্রথম পুরস্কার লাভ করেন, পবা উপজেলার নওহাটা এলাকার তজিবর মিয়া, দ্বিতীয় হন হরিপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার, তৃতীয় হন বহরমপুর এলাকার আব্দুল খালেক।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর কবির ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নজরুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর কবির বলেন, ‘এক সময় এ শহরটির প্রধান বাহন ছিলো টমটম। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেছে। হারানো ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতেই এ ঘোড়দৌড়ের আয়োজন।

এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে নওহাটা এলাকার অধিবাসী টমটম চালক তজিবর মিয়া বলেন, আগের দিনে টমটম চালিয়ে নিজের সংসার এবং ঘোড়ার খাবারের খরচ চলতো। এখন খরচ ওঠা তো দূরে থাক অনেক দিন ঘোড়ার খাবারই জোটানো যায় না। এর পরও পহেলা বৈশাখে এ আয়োজন করায় তারা খুব খুশি।

এদিকে, বর্তমানে রাজশাহী অঞ্চলে বলতে গেলে হারিয়ে যেতে বসেছে এ ঐতিহ্য। সে ঐতিহ্য ধরে রাখতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাইপাস মোড়ে টমটমের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। পরে তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘টমটম চত্বর’।

স/অ