এয়ারপোর্ট–কমলাপুর রুটে ২৭ কিলোমিটার পাতাল মেট্রোরেল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭ কিলোমিটার জুড়ে এখন তুমুল ব্যস্ততা। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ডিএমআরটিডিপি) বা মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজে কর্মীদের পাশাপাশি কর্মকর্তারাও এখন বিরতিহীন সময় কাটাচ্ছেন। বিশাল এই কর্মযজ্ঞ জনভোগান্তির কিছুটা কারণ হলেও যেন মেট্রোরেলের অগ্রগতি নগরবাসীর সামনে শিগগির উপস্থাপন করা যায়, সে তাগাদা সবার মধ্যে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই অংশটুকু উদ্বোধন করা হবে এমনটাই আশা করছেন তারা।

ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ এর আওতায় এই কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে এমআরটি লাইন-০১ এর কাজ হাতে নিয়েছে সরকার। ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এমআরটি লাইন-০১ এয়ারপোর্ট-খিলক্ষেত-বারিধারা-বাড্ডা-রামপুরা-মৌচাক হয়ে কমলাপুরে মিলিত হবে। এটাই ব্যতিক্রমধর্মী মেট্রোরেল হতে যাচ্ছে। এমআরটি-৬ মাটির উপরে নির্মিত হলেও এমআরটি লাইন ০১ মাটির উপর এবং মাটির নিচ দিয়ে নির্মিত হবে। কখনও মাটির উপরে আবার কখনও মাটির নিচ দিয়ে দ্রুতগতিতে চলবে মেট্রোরেল।

এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর পর্যন্ত পাতাল মেট্রোরেল নির্মিত হবে। এই রুটে টিকিট কাটা থেকে শুরু করে সবকিছুই হবে আন্ডারগ্রাউন্ডে। তবে কুড়িল থেকে পূর্বাচল পযর্ন্ত মাটির উপর দিয়ে মেট্রোরেল নির্মিত হবে। এজন্য মেট্রোরেল ০১ নির্মাণে টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্স (টিএ) প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকার এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) মধ্যে ঋণচুক্তি হয়েছে। প্রকল্পের পূর্ণ নকশা এবং টেন্ডার অ্যাসিস্ট্যান্সের জন্য একটি পরামর্শক ফার্মকে নিয়োগ করা হবে।  এজন্য প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। মূলত এই টিএ প্রকল্পের উপর ভিত্তি করেই নেওয়া হবে মেগা প্রকল্প। টিএ প্রকল্পের সফলতার উপর ভিত্তি করে ২০২১ সালে শুরু হবে মূল প্রকল্প।

ডিএমআরটিডিপি’র প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) আব্দুল বাকী মিয়া জানান, এমআরটি লাইন-০১ এর আওতায় ২৭ কিলোমিটার মেট্রোরেল রেল লাইন নির্মিত হবে। এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প। এমআরটি লাইন-৬ মাটির উপর দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। কিন্তু এমআরটি লাইন ০১ কখনও মাটির নিচে, আবার কখনও মাটির উপর দিয়ে যাবে। এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর পর্যন্ত পাতাল মেট্রোরেল নির্মিত হবে এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত মাটির উপর দিয়ে মেট্রোরেল নির্মিত হবে। এজন্য আমরা টিএ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় মাঠ পর্যায়ে শুরু হয়েছে এমআরটি লাইন-০১ এর কাজ। এর আগে এমআরটি লাইন-০১ খাতা কলমেই সীমাবদ্ধ ছিলো।

প্রকল্পের আওতায় ২২ জন সরকারি কর্মকর্তার বেতন ভাতা বাবদ ২৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকছে।  সাইটে কাজের জন্য ২০টি জিপ, ছয়টি ডাবল কেবিন পিকআপ, পাঁচটি মাইক্রোবাস ও দুইটি মোটরসাইকেল কেনা হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় মাসিক বেতন ভিত্তিক ২ হাজার ৭৫১ জন পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে। এরমধ্যে ৮৬৯ জনই  বৈদেশিক পরামর্শক। এ খাতে মোট ব্যয় ৩৬৮ কোটি টাকা।

ইতোমধ্যেই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে ডিএমটিসিএল। ঢাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে পরিবহন সংখ্যা। এরপরেও কমছে না দুর্ভোগ, বাড়ছে জটলা। জটলা নিরসনে পাঁচটি এমআরটি ও দুটি বিআরটি (বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট) রুট নির্মাণ করা হবে।