এমপি লিটন হত্যা মামলায় গ্রেফতার ২৮, ছয় আসামির স্বীকারোক্তি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছেন- হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সাবেক এমপি আবদুল কাদের খাঁন, চার জন কিলার, তিন সহযোগী, আওয়ামী লীগের দুই নেতা এবং জামায়াত-শিবিরের ১৮ নেতাকর্মী। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কাদের খাঁন, কিলার মেহেদী, হান্নান, রানা, শাহীন, কাদের খাঁনের পিএস শামছুজ্জোহা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা তিনটি অস্ত্রের মধ্যে দুটি অস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় এ পর্যন্ত ছয়টি মামলা করা হয়েছে। যার মধ্যে লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে গত ১ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলাকালে পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইন ও একটি সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করে এবং সর্বশেষ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় কাদের খাঁনের বিরুদ্ধে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের দায়ের করা বিস্ফোরকদ্রব্য আইন ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় এ পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের অন্তত ১১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিয়ার রহমান জানান, ‘এমপি লিটন হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১১০ জনকে বিস্ফোরকদ্রব্য ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে লিটন হত্যার দায় স্বীকার করে কাদের খাঁনসহ ছয় আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘এ’ সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এমপি লিটন হত্যা ঘটনায় মূলপরিকল্পনাকারী কাদের খাঁন ও হত্যা মিশনে অংশ নেওয়া চার কিলারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লিটন হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়। তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িতদেরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।’

তিনি আরও আরও বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের নানা দিক বিবেচনা ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষন করে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহ্নত অস্ত্রের পরীক্ষা-নিরিক্ষা, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট, জড়িতদের গ্রেফতার ও তদন্ত সম্পন্ন হলে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে।’

গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. শফিকুর রহমান শফিক বলেন, ‘এমপি লিটন হত্যার মোটিভ উদঘাটন হয়েছে। খুনের পরিকল্পনাকারী ও খুনীরাও ধরা পড়েছে। পুলিশ চার্জশিট দিলে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতারদের বিষয়ে আদালত সিন্ধান্ত নিতে পারবেন।’

প্রসঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহবাজ (মাস্টারপাড়া) গ্রামের নিজ বাড়িতে আততায়ীদের গুলিতে আহত হন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। গুরুত্বর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মারা যান।

সূত্র: বাংলাট্রিবিউন