এমপি এনামুলের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে ফেসবুক পোস্টে জেল খাটেন ছাত্রলীগ নেতাও

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী-৪ আসনের এমপি এনামুলের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি নিয়ে গত সংসদ নির্বাচনের আগে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ভবানিগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদুজ্জামান নাহিদ। এতে নাহিদ পড়েছিলেন এমপি সমর্থকদের রোষানলে। বিয়ের ঘটনাটিকে অস্বীকার করে এমপির পিএস ও বাগমারা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আইসিটি আইনে নাহিদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে একটি মামলাও করেছিলেন। সেই মামলায় ৯৬ দিন জেলহাজতে ছিলেন নাহিদ। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।

অথচ সেই এমপি এনামুল হকই এখন তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করছেন। এমনকি বিয়ের পরে রাজশাহী নগরীর তেরোখাদিয়ে এলাকার বাসিন্দা লিজা আক্তার আয়েশাকে তালাক দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন এমপি নিজেই। কিন্তু এই বিয়ের কথা ফেসবুকে তুলে ধরায় ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে কারাবরণ করতে হয়েছিলে ছাত্রলীগ নেতা নাহিদকে। নাহিদের সেই কারাগারের দিনগুলো এখন ফিরিয়ে দিবে কে-এমন প্রশ্ন তুলেছেন বাগমারার সাধারণ মানুষ।

আবার দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার লিজার বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন এই আসাদ। লিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তিনি এক কোটি চাঁদা চেয়ে এমপিকে ব্লাকমেইল করছেন। এ কারণে লিজার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেছেন পিএস আসাদ।

সর্বশেষ গত শুক্রবার সকালে দায়েরকৃত মামলার আসামি এমপি এনামুলের দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার লিজা দাবি করেছেন, এমপি এনামুল এখনো তাঁর স্বামী। কারণ তিনি তাঁর স্বামীকে তালাক দেননি। এমপি ভুয়া কাগজ তৈরী করে তালাকের বিষয়টি প্রচার করছেন। এর জন্য তিনি তিনি থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে ভবানীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদুজ্জামান নাহিদ তার ফেসবুকে এমপির দ্বিতীয় বিয়ের তথ্য তুলে ধরে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। আর তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে এবং বিয়ের ঘটনা অস্বীকার করে এমপির হয়ে তার ব্যক্তিগত সহযোগী ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ আইসিটি আইনে একটি মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় অতিউৎসাহী হয়ে পুলিশ কোনো তদন্ত ছাড়ায় তড়ি-ঘড়ি করে নাহিদকে গ্রেপ্তারও করেছিলো। এরপর ৯৬ দিন কারাবরণ শেষে জামিনে মুক্তি পান নাহিদ। তবে এখনো মুক্তি মেলেনি তার। ওই মামলা এখনো চলমান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আতঙ্কিত নাহিদ বলেন, এমপির বিয়ে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমি জেল খেটেছি। তবে এখন এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমি এমনিতেই অনেক বিপদ পার করেছি। আমাকে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।’

জানতে চাইলে ওই মামলার বাদী আওয়ামী লীগ নেতা ও এমপির পিএস পরিচয়ধারী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এমপির বিয়ে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আইসটি আইনে নাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। তবে কত তারিখে মামলাটি করেছি বলতে পারব না।’

স/আর