এবার সড়ক বাতিও বন্ধ করছে শ্রীলংকা

জ্বালানির তীব্র সংকটের মধ্যে জলবিদ্যুৎও কমে যাওয়ায় দেশজুড়ে প্রতিদিন রেকর্ড ১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখার ঘোষণার পর এবার সব সড়ক বাতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলংকা। দেশটির এক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক দশকের মধ্যে এর সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তীব্র জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। দেশটির প্রধান শেয়ার বাজারে ধস নেমে এসেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য।

২২ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলার চেষ্টা করছে। কারণ  বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে জ্বালানি আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই সরকারের কাছে।

গত কয়েক মাস ধরেই টানাটানিতে চলছে শ্রীলংকার সরকার। দেনার বোঝায় মুখ থেঁতলে পড়েছে রাজকোষ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। তেল নেই, খাবার নেই। থেমে থেমেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট। আধা ঘণ্টা থাকে তো ২ ঘণ্টা উধাও! জ্বালানি চাহিদা পূরণে আমদানি করবে সেই পথও বন্ধ-রিজার্ভ নেই! এমন অবস্থায় একেবারে নিরুপায় হয়েই সত্তর-আশির দশকের হারিকেন, কুপিবাতি আর কাঠ-কয়লার ইস্ত্রির যুগে ফিরে গেছে স্থানীয়রা।

এখানেও ভোগান্তি! অভাবের দেশে সবকিছুই যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে! হাল আমলে এসেও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে সেকালের পণ্য! নুয়ারা এলিয়া জেলার হ্যাটনের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ বছর পর হঠাৎই বেড়ে গেছে কেরোসিনের বাতি ও কাঠ-কয়লার আয়রনের দাম। একটি কাচের চিমনির দামে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫০০ শ্রীলংকান রুপি। আর কাঠ-কয়লার আয়রন মেশিন বিক্রি হচ্ছে ৯০০ রুপিতে। হারিকেনের চাহিদাও বেড়েছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহের অভাবে পণ্যটির সংকটও তৈরি হয়েছে। শ্রীলংকার নাগরিকরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি। শুধু বিদ্যুৎ বিভ্রাট নয়, গ্যাস-পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
সূত্রঃ যুগান্তর