‘এত ঠান্ডা তাড়াই কি করে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘এত ঠাণ্ডা ল্যাগছে, কি যে করি। ঘরেও থ্যাকতে প্যারছি না। আবার বাহিরেও বাতাসের অত্যাচার। এই ঠাণ্ডায় কাজ করতেও মুন চ্যাচ্ছে না। কিন্তু কাজ না করলে খ্যাতে দিবে ক্যাডা। তাই কষ্ট হলেও কাজ করতে বাহিরে আইছি। কিন্তু ঠান্ডার জ্বালায় হাত-পা ক্যাঁপছে। এত ঠান্ডা তাড়াই কি করে।’

রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নির্মাণকাজের ফাঁকে শীতে কাবু হয়ে মাঠের মধ্যে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন তাড়ানোর চেষ্টার সময় এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ হরিয়ান এলাকার বাসিন্দা নাজিরুল ইসলাম।

নাজিরুলের মতো হাজার হাজার হাজার শ্রমিক রাজশাহীতে অব্যাহত শীতের মধ্যে দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন। আর শীতের কাঁপুনির মধ্যেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে চলেছেন শ্রমিকরা।

সারা দেশে এখন চলছে শৈত প্রবাহ। এতে উত্তরাঞ্চলের জেলা রাজশাহীতে বিজার করছে তীব্র শীত। বলা যায়, শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে জেলার সাধারণ মানুষ। একেবারে প্রয়োজন ছাড়া ঘর ছেড়ে বের হচ্ছেন না কেউ।

কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষ ঘরে বসে না থাকতে পারায় তাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। কাজের সন্ধানে বের হয়ে তীব্র শীতের মধ্যে কাঁপছেন তারা। শীত নিবারণ করতে অনেককে খুড়কুটো জ্বালিয়ে রাখতে দেখা যায়। কিন্তু ছিন্নমূল বা খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষের মাঝে তেমন সাহায্য নিয়ে হাত বাড়ানোর তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব মানুষ।

সকাল সাড়ে ১১টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত রাজশাহীর আকাশে দেখা মেলেনি সূর্যের। কুয়াশাও ছিল এ সময় পর্যন্ত। ফলে ঠাণ্ডার পরিমাণ বেলা বাড়লেও কমেনি। বরং বাতাসের কারণে আরো ঠাণ্ডা জেঁকে বসেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে দেখা মেলে সূর্য মামার। এরপর থেকে ঠান্ডার পরিমাণ কিছুটা কমে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক হেলেনা খানম জানান, রবিবার রাজশাহীতে বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫ দশকি ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গতকাল শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫ দশকি ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রবিবার ছিল চলতি বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আজ রবিবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

তাপমাত্রা নিচে নামার পাশাপাশি উত্তরের হিমেল হাওয়া ঠাণ্ডার পরিমাণ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। পাশাপাশি বয়ে যাচ্ছে শৈতপ্রাহ। চলতি সপ্তাহজুড়েই এরকম ঠাণ্ডা থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।

স/আর