এটি ইনসুলিন নয়, জিএলপি-১ রিসেপ্টর অ্যানালগ ওষুধ

হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (এইচপিএল) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইলাই লিলি অ্যান্ড কোম্পানি সম্প্রতি দেশের বাজারে বিশ্বখ্যাত ট্রুলিসিটি (ডুলাগ্লুটাইড) ওষুধ আনার ঘোষণা দিয়েছে। ট্রুলিসিটি বিশ্বে প্রথম সপ্তাহে একদিন ব্যবহারযোগ্য ইনজেক্টেবল ঔষুধ, যা প্রাপ্তবয়স্ক টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ এবং সপ্তাহে একবার ব্যবহার ছাড়াও ট্রুলিসিটি’র আরও অনেক সুবিধা আছে। গবেষণায় এর ব্যবহারে কার্ডিয়াক সেফটি ও ওজন কমার প্রমাণও রয়েছে।

ট্রুলিসিটি একবার ব্যবহারযোগ্য কলম (সিঙ্গেল-ডোজ পেন) হিসেবে বাজারে উন্মোচন করা হয়েছে, যা ব্যবহারের পূর্বে মাত্রা পরিমাপ করার ও ঝাঁকানোর দরকার হয় না এবং খাওয়ার আগে-পরে ও দিনের যে কোনো সময় ব্যবহার করা যায়। এটি ০.৭৫ মি.গ্রা. এবং ১.৫ মি.গ্রা. এই দুইটি মাত্রায় পাওয়া যাবে। অনেক রোগীরই সিরিঞ্জ ব্যবহার নিয়ে ভীতি রয়েছে। রোগীদের এ ভীতি দূর করতে সূঁচ লুকানো অবস্থায় কলমটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে।
ট্রুলিসিটি গ্লুকাগন-লাইক পেপটাইড (জিএলপি-১) রিসেপ্টর অ্যাগোনিস্ট গ্রুপের অন্তর্ভূক্ত ঔষধ। এটা কোনো ইনসুলিন নয় বরং এটি শরীরের স্বাভাবিক হরমোন জিএলপি-১ এর মতো, যা খাবার গ্রহণের পর ইনসুলিন নিঃসরণের মাধ্যমে রক্তে সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ডিএমডি ও সিইও হালিমুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে ট্রুলিসিটি বাজারজাত ও সরবরাহ করবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনী আবিষ্কার, রোগীদের সুযোগ-সুবিধা ও কমপ্লায়েন্সে বিশ্বাসী। ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় ট্রুলিসিটি বাংলাদেশে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে এবং চিকিৎসকদের ডায়াবেটিস চিকিৎসায় নতুন দিক নির্দেশনা দিবে।’

ইলাই লিলি অ্যান্ড কোম্পানির দক্ষিণ এশিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর লুকা ভিসিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য ডায়াবেটিস বোঝাস্বরূপ। দেশে ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং তাদের চিকিৎসা পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৯২৩ সাল থেকে বৈশ্বিকভাবে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় লিলি কাজ করে যাচ্ছে। ট্রুলিসিটি বাংলাদেশের ডায়াবেটিস চিকিৎসায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হবে। ডায়াবেটিস রোগী ও চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানে সহায়তায় বাংলাদেশে ট্রুলিসিটি’র উন্মোচন আমাদের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ‘টাইপ-২ ডায়াবেটিস একটি ক্রমবর্ধমান রোগ। কিন্তু বাংলাদেশে বেশিরভাগ রোগীরই ডায়াবেটিস ঠিক মত নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ট্রুলিসিটি নতুন, নন-ইনসুলিন (ইনসুলিন নয় এমন) ইনজেকশন, যা রোগীদের প্রয়োজন ও সুবিধা বিবেচনা করেই তৈরি করা হয়েছে।’

ট্রুলিসিটি একটি প্রেসক্রিপশন ড্রাগ, যা শুধুমাত্র ডায়াবেটিস চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে। ওষুধ গ্রহণের সাথে সাথে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

সূত্র কালের কন্ঠ