এক সাথে ২৭ টি সাপ মারার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কথায় আছে,  ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা।’ নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে একটি দুটি নয়, একসাথে মেরে ফেলা হলো ২৭ গোখরা সাপ। রাজশাহী মহানগরীর বুধপাড়া এলাকার একটি বাড়ির শোবার ঘরে রাত নয়টা থেকে রাত ১২টার মধ্যে এগুলো মেরে ফেলা হয়। শোবার ঘরে সাপ নিয়ে আতঙ্ক ছিল পুরো বাড়িটিতে। আর ধীরে ধীরে সে আতঙ্ক ছড়িয়ে যায় পুরো এলাকা জুড়ে। অনেকটা প্রাণ ভয়েই সাপগুলো মেরে ফেলেছিলেন বুধপাড়া এলাকার মাজদার আলী।

ঘরের কোনে একে একে সাপ বের হয়ে আসায় সেগুলোকে মেরে ফেলেন তিনি ও তার দুই ভাই। কিন্তু তারপরেও প্রশ্ন থেকেই যায়, সাপগুলো না মেরে প্রাণী সম্পদ বিভাগ অথবা বন বিভাগকে ডেকে সেগুলো তাদের হাতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা যেত কিনা? তাহলে হয়তো বেঁচে যেত প্রকৃতিতে ধিরে ধিরে হারিয়ে যেতে বসা গোখরা সাপ। আর কারণেই এক সঙ্গে এতোগুলো সাপ মারার খবর ছড়িয়ে পড়ার ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া।

 

যদিও সাপ আতঙ্কে সারা রাত নির্ঘুম রাত অতিবাহিত পর সাপ মারা খবর ছড়িয়ে পড়লে সকালে দলে দলে ওই বাড়িতে ভীড় জমাতে থাকেন এলাকাবাসি। সিল্কসিটিনিউজে এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সাপের সন্ধানে উপস্থিত হন গণমাধ্যম কর্মীরাও। এদিকে একসাথে এতোগুলো সাপ মেরে ফেলার ছবিগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। সেই সাথে উঠে আসে নানা প্রতিক্রয়া। নানা ভাবে পাঠকরা তুলে ধরছেন তাদের মন্তব্য।

ফেসবুকে পাঠকদের মন্তব্য ছিল কিছুটা এরুপ…

আরাফাত রুবেল নামে এক পাঠক মন্তব্য করেন, এক সাথে এতো সাপ প্রথম দেখলাম, তবে সাপগুলো না মেরে সংরক্ষণ করা হলে ভালো হতো, কারন: এগুলো দেশের সম্পদ। আপনি চাইলেও লাখ টাকা দিয়ে এমন একটি সাপ আনতে পারবেননা।

খালেদ হাসান নামে আরেকজন মন্তব্য করেন, এতগুলো সাপ মারা ঠিক হয়নি, সাপ থাকলে কামাই রুজি ভালো হয়,আর সাপ সব বাড়িতে থাকে না।

 

 

সনৎ সাহা সন্ত নামে এক পাঠক মন্তব্য করেন, কাজটা মোটেও ঠিক হয়নি।সাপগুলো আমাদের সম্পদ যা সৃষ্টি করেছেন পরম করুনাময়। যা সৃষ্টি করা তোমার পক্ষে সম্ভব নয় তা বিনষ্ট করতে নেই। বরং ওগুলো রক্ষা করো।

‘মা সাপটাকে খুজে বের করা দরকার তানা হলে বিপদ’ মন্তব্য ছিল মাথুল রাজশাহী নামক ফেসবুক ব্যবহারকারীর।

 

রসিকতা করে সিহাব হারেসি নামে আরেকজন লেখেন, মা গোখরার ফাশি চাই..অবিলম্বে তাকে খুজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা দরকার..?

ফারহানা বৃষ্টি লেখেন, “ঠিক করেছে।”

সাপ মারা নিয়ে কথা হয় মাজদার আলীর সঙ্গে। তিনি সিল্কসিটিনিউজকে জানায়, তখন রাত সাড়ে নটা হবে। মাটির বাড়ি, অন্ধকার ঘর। বিছানায় স্ত্রী ও সন্তান শুয়ে আছে। বাইরে থেকে স্বামী মাজদার আলীর ঘরে ঢুকে লাইট দিতেই চোখে পড়ে সাপের বাচ্চা। তখন নিজেই সেই সাপটিকে লাঠি দিয়ে মেরে ফেলেন। একটু পরে এক সঙ্গে আরো দুইটি সাপের বাচ্চা বের হয়ে আসে। সে দুটিকেউ তিনি লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। এর এক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি সাপ মেঝেতে বের হয়ে আসে। তখন কোনো কিছু না করেই তার আরো দুই ভাই সাইদার আলী ও হায়দার আলীকে ডাকেন মাজদার আলী। এরপর থেকে শুরু হয়ে সাপ মারা। সারা রাতে একটি দুইটি করে একে একে ২৭টি সাপ মারেন তারা।  অবশেষে সবগুলো্ সাপ মাটিতে পুতে দেন তারা।

 

এতোগুলো সাপ এক সাথে মারার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লেও বিষয়টি অবাক করেছে সবাইকেই। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসির রাত ১২টার মতো এমন এক সময়ে যখন ঘরের মধ্যে সাপ থাকে সে সময়ে প্রাণি সম্পদ অথবা বন বিভাগকে খবর না দিয়ে প্রাণ বাচানোকেই সঠিক বলে বিবেচনা করা হয়েছে।

স/শ