একে একে ২৭ বিয়ে, ১৩ ব্যাংকের সাথে জালিয়াতি

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক: গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ভারতের ওড়িশায় গ্রেফতার হন ৬৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তার নাম বিভু প্রকাশ সোয়াইন। ওই ব্যক্তির দোষ, ২৭ জনকে বিয়ে করা! ৫ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা এই ব্যক্তি যে দেখতে কোনও হলিউড বা বলিউড তারকার মতো, তাও নয়। তা সত্ত্বেও ভারতের ১০টি রাজ্যে তিনি একে একে ২৭ জনকে বিয়ে করেছেন।

তবে তাছাড়াও তার কীর্তির তালিকা বেশ লম্বা। কেরালার ১৩টি ব্যাংকের সাথে জালিয়াতি করেছেন। ১২৮টি ভুয়া ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে এই কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি হায়দরাবাদে ডাক্তারিতে ভর্তির নামে ২ কোটি টাকা প্রতারণা করেছেন বিভু।

২০২১ সালের মে মাসে তার ২৭ জন স্ত্রীর মধ্যে একজন পুলিশে অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বিভুকে গ্রেফতার করা হয়। ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের একজন সহকারী কমান্ড্যান্ট থেকে শুরু করে ছত্তিশগড়ের একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, নয়াদিল্লির এক স্কুলের শিক্ষক, আসামের তেজপুরের একজন ডাক্তার, সুপ্রিম কোর্ট এবং দিল্লি হাইকোর্টের দুই আইনজীবী, একজন সরকারি কর্মচারীকে বিয়ে করেছেন বিভু। ইন্দোরেও তার স্ত্রী আছেন একজন।

কেরালার প্রশাসনিক পরিসেবার একজন কর্মকর্তাকেও বিভুর স্ত্রী। জীবনসাথী ডটকম, শাদি ডটকম এবং ভারতমাট্রিমনির মতো বৈবাহিক সাইটগুলোর মাধ্যমে বিভু তার স্ত্রীদের সঙ্গে আলাপ জমিয়ে তাদের শিকার করেন। তার সব স্ত্রীর বয়স ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে বা তালাকপ্রাপ্ত।

বিভু নিজেকে একজন ৫১ বছর বয়সী অধ্যাপক হিসেবে পরিচয় দেন, যিনি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উপ-মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত। নিজের বার্ষিক আয় ৫০-৭০ লাখ রুপি বলে দাবি করেন বিভু। তার তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে তিনি এনইইটি ইউজি ও পিজি প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে দক্ষিণ কেন্দ্রীয় বিভাগে নিযুক্ত রয়েছেন। কিছুটা বৃদ্ধ দেখালেও তার ‘সরকারি চাকরি’র কথা ভেবে পাত্রীরা বিভুকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যেতেন। এক একজন ‘শিকারের’ থেকে ২ থেকে ১০ লাখ রুপি করে নিয়ে প্রতারণা করেছেন বিভু।

বিভুর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী দিল্লির বাসিন্দা। ২০১৮ সালে বিভু তাকে বিয়ে করেন। অভিযোগকারী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ওড়িশায় থেকেছেন এবং ভাবতেন যে ওড়িয়ারা কখনও কাউকে ঠকাতে পারেন না। আমি ভারতম্যাট্রিমনিতে প্রোফাইল তৈরির এক সপ্তাহ পরই বিভু আমাকে মেসেজ করেন।

সে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে করার কথা বলেন। তবে ২০১৮ সালে বিয়ের অনেকদিন পরে সে আমাকে প্রথমবারের জন্য ওড়িশা নিয়ে যায়। এরপর সে একদিন আচমকা কাজের কথা বলে বেঙ্গালুরু চলে যায়। এরপর থেকেই মাঝে মাঝে সে আচমকা চলে যেত এবং প্রায় কয়েক মাস ওর কোনও পাত্তা পাওয়া যেত না। শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালের মে মাসে এই নারী বিভুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ওড়িশা পুলিশ বিভুকে গ্রেফতার করে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন