এই প্রথম কোন দেশে শুরু হলো অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া

যুক্তরাজ্যে আজ থেকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও এ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে।

অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি অন্যান্য করোনাভাইরাস টিকার চেয়ে সহজে সংরক্ষণ ও বহন করা যায়, আর দামেও সবচেয়ে সস্তা – তাই এটির ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এর মধ্যেই এ টিকার জন্য সব মিলিয়ে ৩০০ কোটিরও বেশি ডোজের অর্ডার পাওয়া গেছে। বাংলাদেশও এ টিকাটিই কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

এই প্রথম পৃথিবীর কোন দেশে এ টিকাটি দেয়া শুরু হলো।

বিভিন্ন টিকা বিক্রি হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন দামে

অক্সফোর্ড শহরের চার্চিল হাসপাতালে সোমবার সকালে ৮২ বছর বয়স্ক কিডনির রোগী ব্রায়ান প্লিংকারের বাহুতে টিকা দিয়ে এই টিকার উদ্বোধন করা হয়।

ব্রিটেনে অবশ্য এর আগেই ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া শুরু হয়ে গেছে।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা দেয়ার সূচনাকে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলে আখ্যায়িত করেন। বেশ কয়েকটি কাউন্টিতে একযোগে এই টিকা দেয়া শুরু হলো এবং কর্তৃপক্ষ বলছে, ৫ লক্ষেরও বেশি ভ্যাকসিন এখন দেবার জন্য তৈরি।

সবচেয়ে বেশি টিকার অর্ডার পেয়েছে অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকা

বাংলাদেশও এই টিকাটি কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ভারতে এই টিকাটি উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট, যাদের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ।

তবে অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার অনুমোদন দেয়ার ফলে টিকাদানের গতি বেশ খানিকটাই বেড়ে যাবে কারণ এই টিকাটি স্বল্পমূল্যের এবং সহজেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেয়া যায়।

সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই টিকাটি সাধারণ ফ্রিজেই সংরক্ষণ করা যায়, যেখানে ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের টিকাটি সংরক্ষণ করতে হয় -৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।

কীভাবে এই টিকা কাজ করে?

শিম্পাঞ্জিদের সংক্রমিত করতে পারে এমন একটি সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের ভাইরাসের মধ্যে জিনগত পরির্তন এনে এই টিকাটি তৈরি করা হয়েছে।

কোভিডের টিকা আবিষ্কারে কে কত অর্থ ব্যয় করেছে

এটিকে এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে যাতে এটি মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতে না পারে এবং এর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাসের মূল নকশার একটি অংশ, যা কিনা ‘স্পাইক প্রোটিন’ নামে পরিচিত।

যখনই এই মূল নকশাটিকে শরীরে প্রবেশ করানো হয় তখনই সেটি মানবদেহে স্পাইক প্রোটিন তৈরি করতে শুরু করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তখন এটিকে একটি হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে এবং এটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে।

পরবর্তীতে যখন ঐ ব্যক্তি আসল ভাইরাসে আক্রান্ত হবে, তখন তার শরীর আগে থেকে জানবে যে কীভাবে এই ভাইরাসটিকে প্রতিরোধ করা যায়।

সূত্র:বিবিসি