উপজেলা ভূমি অফিসগুলো স্বচ্ছ রাখতে ই-নামজারি চালুর নির্দেশ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশের উপজেলা ভূমি  অফিসগুলো জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সেবা ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এছাড়া ভূমির নামজারি সেবা সহজ, নির্ভুল এবং গণমুখী করার লক্ষ্যে সব উপজেলায় ই-নামজারি সেবা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘উপজেলা ভূমি অফিসগুলোতে যেন সহজে ও কম সময়ে নির্ভুল নামজারি করা যায়, সেজন্য এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ’

মাকছুদুর রহমান জানান,নামজারিতে কত টাকা দিতে হয়, তা জনগণের মাঝে প্রচার করতে হবে। সহকারী কমিশনার ভূমি অফিস থেকে জনগণ কী ধরনের সুবিধা পাবে, তা প্রচার করা এবং কীভাবে এই সেবা নিশ্চিত করা যাবে, তা বলা হয়েছে নির্দেশনায়। পর্যাক্রমে দেশের প্রতিটি উপজেলা ভূমি অফিসে ই-নামজারি চালু করতে হবে। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে কর্মকর্তাদের।

ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। স্বচ্ছতা আনা গেলে মানুষের যে সব অভিযোগ  রয়েছে তা থাকবে না। অফিস ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসলেই তা দূর হবে বলে মনে করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এই কর্মকর্তা।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়, বিদ্যমান বিধি-বিধান সম্পর্কে জানান, সৃজনশীলতার মাধ্যমে স্থানীয় চর্চার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উত্তম চর্চার ব্যবহার নিশ্চিত করা, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দৃশ্যমান অফিস ব্যবস্থাপনা সৃষ্টি এবং দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে কম সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে জনগণকে সেবা দিতে হবে। নামজারি উপজেলা ভূমি অফিসের গুরুত্বপুর্ণ কাজ। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কোনও কোনও উপজেলা ভূমি অফিস থেকে যথাযথভাবে সেবা পাওয়া যাচ্ছে না।

এই কাজকে আরও স্বচ্ছ, গতিশীল, নির্ভুল, সহজতর ও গণমুখী করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের  এটুআই কর্মসূচি থেকে  পাইলট প্রকল্প হিসেবে কোনও কোনও উপজেলায় ই-নামজারি সিস্টেম চালু করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, নামজারি ও জমাভাগ সংক্রান্ত্র মামলা নিষ্পত্তির জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের জারি করা সব নির্দেশনা মানবে হবে। সরকারের ধার্য করা ফি দৃশ্যমান জায়গায় স্থাপন করতে হবে। অফিস থেকে প্রাপ্য সব ধরনের সুবিধা দিতে সিটিজেন চার্টার প্রস্তুত করে দৃশ্যমান স্থানে টানাতে হবে।

অফিস স্টাফদের আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। আইডি কার্ডে দৃশ্যমানভাবে ছবি, ফোন নম্বর থাকতে হবে। আইডি কার্ডধারী একজন স্টাফ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। নামজারি আবেদন পেলে সঙ্গে সঙ্গে রেজিস্ট্রারে তুলতে হবে। কোনও মতেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তার মাধ্যমে নামজারি আবেদন গ্রহণ করা যাবে না। উপজেলা ভূমি অফিসের প্রত্যেকের দায়িত্ব আলাদা করে বন্টন করতে হবে। নামজারি আবেদন নেওয়ার পর কোনও কারণে সহকারী ভূমি কমিশনার অথবা অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকলে, ওই দিনেই নামজারির মামলা নম্বর এবং পরবর্তী তারিখ উল্লেখ করে রশিদ দিতে হবে। আবেদন নেওয়ার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা অনুসরণ করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘সার্বিকভাবে সব বিষয় তুলে ধরে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপর প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য যা করণীয়, তা করা হচ্ছে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন