অনিশ্চয়তায় ইউরোপে বসবাসকারী ১২ লাখ ব্রিটিশ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি নথি ফাঁসের পর ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া) নিয়ে নতুন করে চাপের মধ্যে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ওই নথিতে বলা হয়, ব্রেক্সিট গণভোটের পর ব্রিটিশ সরকার বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে যে আচরণ করেছে, তার প্রতিফল ভোগ করতে হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকদের।

 

ফাঁস হওয়া নথির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, সম্প্রতি ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের ব্রিটেনে পাওয়া সুবিধা বন্ধে তোড়জোর শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। অথচ তিনি ইউরোপে থাকা ব্রিটিশ নাগরিকদের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আর এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে বাস করা প্রায় ১২ লাখ ব্রিটিশ নাগরিকের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

 

২০১৯ সালের পর থেকে ইউরোপে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকরা যেসব সুবিধা ভোগ করছেন, তা বাতিল করে একজন বিদেশি নাগরিক হিসেবে থাকা-খাওয়ার খরচ যোগাতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর কাছে সুপারিশ করা হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ওই নথিতে। ‘কোনও ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে করে থাকলে, বা যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করলেও ব্রিটিনে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি, বা নাগরিকত্ব পাওয়া কষ্টকর’ নথিতে উল্লেখ করা হয়।

 

ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে ইইউ-র সঙ্গে তারা কোনও চুক্তি করতে পারেনি। আবার তারা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসলে বিনা খরচে বসবাসের জন্যও কোনও ব্যবস্থা করেনি। অথচ যুক্তরাজ্য থেকে ইইউভুক্ত দেশের যে নাগরিকদের ফিরে যেতে হচ্ছে, তাদের বিনা খরচে বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে সেসব দেশের সরকারের পক্ষ থেকে।

 

এর ফলে ২৩ জুন ব্রেক্সিট গণভোটের পর থেকে ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকত্ব আবেদনের হার ৫০ শতাংশ বেড়েছে। গণভোটের আগের তিন মাসে আবেদন জমা পড়েছিল ৩৬ হাজার ৫৫৫টি। অথচ পরের তিন মাসে জমা পড়েছে ৫৬ হাজার ২৪টি আবেদন।

 

ওই নথিতে আরও বলা হয়, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কাউন্সিল ও কমিশনে দেড় হাজারেরও বেশি ব্রিটিশ নাগরিক কাজ করছেন। তাদের ক্যারিয়ারেও ব্রেক্সিটের প্রভাব পড়বে। কারণ ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেবল ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকরাই কাজ করতে পারেন।’

 

তবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘যেসব ইইউ নাগরিক বর্তমানে ব্রিটেনে বসবাস করছেন, তাদের অবস্থান অক্ষুণ্ন রাখতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। তবে ইইউভুক্ত দেশে বসবাসকারী ব্রিটিশর অবস্থান ক্ষুণ্ন হলে ইইউ নাগরিকদের অবস্থানও আগের মতো থাকবে না।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন