উপজেলায় সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানো হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
জাহিদ মালেক বলেন, উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালের কাঙ্ক্ষিত সেবা বাদ দিয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন সম্ভব না। অথচ উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবাতেই আমাদের মূল ঘাটতি রয়ে গেছে। উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর অনেক জায়গাতেই মেশিন নষ্ট ছিল। কিছু জায়গায় তো মেশিনই ছিল না। লোকবলের তীব্র অভাব ছিল। উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তাররা বদলি নিয়ে ঢাকা বা জেলা পর্যায়ে চলে যেতেন। এগুলো আমরা আগে বুঝতে পারিনি। দেশের ৮টি বিভাগের বিভাগীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবার মান সরেজমিনে পরিদর্শন করে ও ঘুরে ঘুরে দেখে এগুলো আমরা জানতে পেরেছি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জেলা পর্যায়ের মতো করে উপজেলা পর্যায়ে আমরা বিশেষ নজর দিয়েছি। নষ্ট মেশিন মেরামত করা ও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন মেশিন কেনা হয়েছে। তদবির করে উপজেলা পর্যায় থেকে বদলি নিয়ে ঢাকায় আসা বন্ধ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ান ও ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেওয়ার কাজ চলকান আছে। উপজেলা পর্যায়ে বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা, ডায়ালাইসিস বেড দেওয়া, উপজেলা হাসপাতালেই অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন করার উদ্যোগ নেওয়াসহ নানাবিধ কাজ করে উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান দ্বিগুণ বাড়ানো হচ্ছে। আমরা বুঝে গেছি, উপজেলা পর্যায়ে সেবার মান না বাড়িয়ে দেশের মানুষের জন্য কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা অসম্ভব।

স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্ব তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়, অনেক টাকা খরচ করে নিশ্ব হয়ে যায়। অথচ আমাদের দেশে বড় বড় সরকারি হাসপাতাল আছে, দামি দামি যন্ত্রপাতি আছে, দেশে নামকরা চিকিৎসকও আছেন। এখন শুধু আপনাদের (চিকিৎসক ও হাসপাতাল পরিচালক, স্বাস্থ্যখাতের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা) সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা লাগবে। সরকার আপনাদের জন্য সবকিছুই করবে। কিন্তু আপনাদের এই আন্তরিকতা থাকতে হবে মন থেকে। নেতৃত্ব দিতে হবে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো করে মনে দেশপ্রেম নিয়ে। শেখ হাসিনা যেমন শত বাধা উপেক্ষা করেও দেশের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে দিনরাত নির্ভিক কাজ করে যাচ্ছেন, নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে যাচ্ছেন, আপনাদেরও সেভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যিনি যে হাসপাতাল বা সরকারি স্বাস্থ্যখাত পরিচালনায় দায়িত্ব পাবেন তাকে সেই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার সকল দায়ভার নিতে হবে। হাসপাতাল অপরিচ্ছন্ন থাকলে, মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে গেলে এর জন্য নিজের বিবেকের কাছে দায়ী থাকবেন, আমরাও এগুলো মনিটর করে ব্যবস্থা নেব। এজন্য এমনভাবে সেবা দিতে হবে, যাতে আগামীতে বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশেই বিদেশিরা চলে আসেন। আপনারা করোনা মোকাবিলায় সফল হয়েছেন, আর একটু আন্তরিক হলেই চিকিৎসা সেবাতেও সফল হবেন। আপনাদের একটু প্রচেষ্টাতেই দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবেন। মানুষের অনেক কষ্টের টাকাও বেঁচে যাবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক আহমেদুল কবীর।

সভায় সুচনা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া। ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার সিভিল সার্জন, জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং ৭৬টি উপজেলা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।