উন্নয়নশীল দেশ হওয়া কেন উদযাপন করছে বাংলাদেশ সরকার?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করায় তা উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সাফল্য শোভাযাত্রা করা হবে আজ।

সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়া হবে।

কিন্তু আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তাহলে এখনই কেন এই উদযাপন?

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আযম বিবিসিকে জানিয়েছেন, সরকার মনে করে, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবজনক অর্জন।

কারণ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হবার সবগুলো শর্ত প্রথমবারের মত বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে।

আজ ৫৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের কর্মীরা শোভাযাত্রা করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে যাবেন

এর আগে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতের রায়ে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মীমাংসায় বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা পাবার বিষয়টি উদযাপন করেছিল সরকার।

একইভাবে ২০১২ সালে, মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) করা মামলায় বাংলাদেশ জেতার পরেও একই রকমভাবে উদযাপন করা হয়েছিল।

কিন্তু ব্যাপ্তি এবং ব্যাপকতার দিক থেকে আজকের উদযাপনটি বেশ বড়।

এর পেছনে রাজনৈতিক কোন হিসেব-নিকেষ আছে কিনা সে প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি মিঃ আযম।

তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক—এই তিনটি শর্ত পূরণ করে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে।

তিনি দাবী করেছেন, বিশ্বের কোন দেশই একসঙ্গে এই তিনটি সূচকে অগ্রগতি করতে পারেনি। বাংলাদেশ এখানে ব্যতিক্রম।

তিনি জানিয়েছেন, এখন উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাবার জন্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হবে।

কারণ জাতিসংঘ ২০২১ সালে একটি পর্যালোচনা করবে। এরপর ২০২৪ সালে আরেকটি মূল্যায়ন হবে বাংলাদেশের। সব কিছু ঠিক থাকলে ঐ বছরই আসবে চূড়ান্ত স্বীকৃতি।

এজন্য সপ্তাহব্যাপী উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, যার সমন্বয় করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।

মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক---তিন ক্ষেত্রেই উন্নতি হয়েছে

২০শে মার্চ থেকে ২৬শে মার্চ পর্যন্ত নানারকম কর্মসূচী রয়েছে এই পরিকল্পনায়।

এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা ছাড়াও, আজ বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আতশবাজি উৎসব। তাতেও প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন।

পরদিন শুক্রবার হাতিরঝিলে সরকারী উদ্যোগে আলোকসজ্জার উৎসব করা হবে।

এছাড়া ঢাকার নয়টি স্থান থেকে ৫৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে শোভাযাত্রা করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে।

শোভাযাত্রার কারণে বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং চারপাশের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলে সীমিত থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এছাড়া জেলা উপজেলা পর্যায়েও সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিঃ আযম। বিবিসি বাংলা