উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে তৃতীয় ধাপে দেশের ৬২টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে। শীত উপেক্ষা করে শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। গতকালই কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়। ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্ন রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

তৃতীয় ধাপে সবগুলো পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে।

এ ধাপে ৬৪ পৌরসভায় ভোটের তফসিল হলেও আইনগত জটিলতা থাকায় পাবনার সুজানগর পৌরসভার ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। আর কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভায় মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না।

এ ভোট নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি শঙ্কা-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। এ ধাপের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় বাধা দেওয়া নিয়ে নানা অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা। অনেক প্রার্থী কেন্দ্র দখলের শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। প্রার্থীদের হত্যার হুমকি, হামলা-পাল্টা হামলা, আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন পৌরসভায়। এদিকে নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারের সদস্যরা।

এ ধাপের নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি মেয়র পদে লড়ছেন বেশকিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীও।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, ৬২টি পৌরসভায় ২২৯ জন মেয়র পদে, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৫৫ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৩৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। মোট ৩ হাজার ৩৪৪ জন প্রার্থী তৃতীয় ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তাছাড়া ইতোমধ্যে তৃতীয় ধাপে ৩৭ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন। কুমিল্লার লাকসাম, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া– এই পৌরসভায় মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন। এছাড়া নয়জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এবং ২৫ জন সাধারণ কাউন্সিলর পদেও প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন।

নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ইতোমধ্যে বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। ভোটের দিন চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে।

আর ৬২টি পৌরসভায় ৬২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে মোট পাঁচ দিনের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগের দুই দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পরের দুই দিন তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

যে ৬২ পৌরসভায় ভোট

দিনাজপুরের হাকিমপুর, নীলফামারীর জলঢাকা, কুড়িগ্রামের উলিপুর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, বগুড়ার ধুনট, শিবগঞ্জ, গাবতলী, কাহালু ও নন্দীগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর এবং নওগাঁর ধামইরহাট ও নওগাঁ সদর।

রাজশাহীর মুন্ডুমালা ও কেশরহাট, নাটোরের সিংড়া, পাবনা সদর, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু ও কোটচাঁদপুর, যশোরের মনিরামপুর, নড়াইলের সদর ও কালিয়া, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ, খুলনার পাইকগাছা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, বরগুনা সদর ও পাথরঘাট, ভোলার বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান, বরিশালের গৌরনদী ও মেহেন্দিগঞ্জ এবং ঝালকাঠীর নলছিটি।

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী, টাঙ্গাইল সদর, মির্জাপুর, ভূঞাপুর, সখীপুর ও মধুপুর, জামালপুরের সরিষাবাড়ী, শেরপুরের নকলা ও নালিতাবাড়ী, ময়মনসিংহের গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনার দুর্গাপুর, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, মুন্সীগঞ্জ সদর, রাজবাড়ীর পাংশা, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এবং শরীয়তপুরের নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও জাজিরা, সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ, মৌলভীবাজার সদর, কুমিল্লার বরুড়া ও চৌদ্দগ্রাম, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফেনীর হাতিয়া, নোয়াখালীর চৌমুহনী ও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ