উত্তরা গণভবনের গাছ কর্তন: তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের আগেই দুই কর্মকর্তাকে বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
নাটোরে উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির তদন্ত শেষ না হতেই গণপূর্ত বিভাগের দুই কর্মকর্তাকে তরিঘড়ি করে অন্যত্র বদলী করে দেয়াকে অনেকেই রহস্যজনক মনে করছেন। মরা ও ঝড়ে পড়ার নামে লাখ লাখ টাকার তাজা গাছ কেটে নেয়ার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যেই নাটোর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জিয়াউল হককে পটুয়াখালী জেলার গোলাচিপায় এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানকে বরগুনা জেলায় বদলী করা হয়েছে।

এব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান আকন্দ জানান, গত ১৭ অক্টোবর বেশ কিছু গণমাধ্যমে মরা ও ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ কাটার ১৮ হাজার ৪০০ টাকার টেন্ডারের বিপরিতে অনিয়ম করে ঠিকাদারের কয়েক লাখ টাকার তাজা গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার খবরটি ছাপা হলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রাজশাহীর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিল্লুর রহমানকে প্রধান এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত তদন্ত কমিটি ১৭ অক্টোবরেই উত্তরা গণভবন পরিদর্শন ও তদন্ত করে যান। ওই তদন্তে প্রাথমিক ভাবে গাছ কাটার অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জিয়াউল হক এবং উপ- সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানকে গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে বদলী করা হয়। বদলীর আদেশে তাদের দু’জনকেই নাটোর থেকে ২২ অক্টোবরের মধ্যে চার্জ বুঝিয়ে না দিলে ২৩ অক্টোবর স্ট্যান্ড রিলিজ করার নির্দেশনা দেয়া হলে অভিযুক্ত দু’জনেই স্থানীয় ব্যবস্থপনায় তাদের নিজ নিজ চার্জ বুঝিয়ে দিয়ে ২২ অক্টোবরেই নতুন কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য নাটোর থেকে রিলিজ অর্ডার নিয়ে নেন।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে জিয়াউল হক ও কামরুজ্জামানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তারা দু’জনই জানান, সে সময় তার উত্তরা গণভবনে কাজ করছেন এবং সেখানে তাদের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান আকন্দও রয়েছেন। চার্জ বুঝে দেয়ার পরেও তাদেরকে দিয়ে কেন কাজ করানো হচ্ছে সে ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী সহ তারা কেউই কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।


এব্যাপারে উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে জানান দুই কর্মকর্তাতে বদলী করার কথা তিনিও শুনেছেন তবে সেটা তাদের বিভাগীয় ব্যাপার বলে তিনি মন্তব্য করেন। উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের একদিন আগেই তরিঘরি করে কেন দু’জন কর্মকর্তাকে নাটোর থেকে অন্যত্র বদলী করে দেয়া হলো তা রহস্যজনকই থেকে গেলো।

এদিকে, সোমবার জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জিয়াউল হক এবং সেকশন অফিসার (এসও) কামরুজ্জামান কে দোষি সাবস্ত করেছে তদন্ত কমিটি। এই দুজন গণভবনের শতবর্ষী গাছ কাটার বিষয় জানলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি, এমনকি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও জানায়নি। যার কারণে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এছাড়া মঙ্গলবার বিকেলে উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে কমিটির সভাপতি নাটোরের জেলা প্রশাসক উত্তরা গণভবন পরিদর্শন করেছেন।

স/অ