উত্তরাঞ্চলের কারাগারগুলোতে বন্দি ১৩৭ জেএমবি ক্যাডারের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী বিভাগের আটটি কারাগারে বন্দি ১৩৭ জেএমবি ক্যাডারের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃদ্ধি করা হয়েছে কারাগারের নিরাপত্ত ব্যবস্থা। দেশজুড়ে জঙ্গি আতঙ্ক বৃদ্ধির পর থেকেই উত্তরাঞ্চলের এসব জেএমবি ক্যাডারদের প্রতি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
রাজশাহী করাগারের একজন কর্মকর্তা সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘কারাগারে বসেই জেএমবি ক্যাডাররা নাশকতার ছক কষতে পারে বলে এর আগেই গোয়েন্দারা সরকারকে অবহিত করেন। এরপর থেকেই রাজশাহী কারাগারে বন্দি থাকা জেএমবি সদস্যদের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি  করা হয়।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, এ কারাগারে বর্তমানে ৫৬ জন জেএমবি ক্যাডার বন্দি রয়েছে। এদের মধ্যে ২৯ জন হাজতি আর ২৭ জন হলো সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি। যাদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন ২০০৫ সালে দেশে সিরিজ বোমা হামলাকারী শীর্ষ জেএমবি ক্যাডাররা।
এদের মধ্যে রয়েছেন দুটি করে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জেএমবি ক্যাডার জাহাঙ্গীর ও আব্দুল আওয়াল ও সাখাওয়াত, এনামুল হক, মুনসুরসহ চিহ্নিত কয়েকজন জেএমবি ক্যাডার।
ওই সূত্রটি আরো জানায়, এসব জেএমবি ক্যাডাররা দীর্ঘদিন ধরেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি হয়ে আছে। তাই তারা এ কারাগার থেকে বাইরের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যেন কোনো যোগাযোগ রাখতে না পারে, সে জন্য তাদের প্রতি বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে।
জানতে চাইলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারাধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বন্দি জেএমবি সদস্যদের প্রতি বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। তারা যেন বাইরের কারো সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ রাখতে না পারে, সেইদিক থেকে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বন্দি জেএমবি সদস্যদের সঙ্গে কারাগারে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের দেখা করতেও এখন কাড়কড়ি করা হয়েছে। সাক্ষাৎ প্রার্থীদের সঙ্গে কারা দেখা করছে, তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপিসহ নাম পরিচয় রাখা হয়। পাশাপাশি নগর গোয়েন্দার বিশেষ শাখার একজন সদস্য এবং কারাগারের একজন কর্মকর্তাও সাক্ষাতের সময় উপস্থিত থাকেন সেখানে। যেন কোনো তথ্যই জেএমবি সদস্যরা আদান-প্রদান করতে না পারে।
বগুড়া জেলা কারাগারের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, এ কারাগারে বর্তমানে বন্দি রয়েছেন ২৩ জন জেএমবি ক্যাডার। যাদের মধ্যে ২১ জন হাজতি আর দু’জন কয়েদি। বগুড়ায় একের পর এক হামলার সন্ত্রাসী হামলায় পর থেকেই জেলা কারাগারে বন্দি জেএমবি সদস্যদের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি করা হয় বলেও এ কারাগারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এর বাইরে বিভাগের পাবনা জেলা কারাগারে আটক রয়েছেন ৭ জন, নওগাঁয় ২৩ জন, সিরাজগঞ্জে ১১ জন, নাটোরে ১ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৮ জন ও জয়পুরহাটে ৮ জন। যাদের মধ্যে জয়পুরহাটে রয়েছেন ৭ জন সাজাপ্রাপ্ত জেএমবি ক্যাডার এবং নাটোরে রয়েছেন সাজাপ্রাপ্ত একজন।

উত্তরাঞ্চলের কারাগারগুলোতে বন্দি জেএমবি ক্যাডারদের প্রতি নজরদারি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী উপ-মহা কারাপরিদর্শক বজলুর রশিদ সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই উত্তরাঞ্চলের সবগুলো কারাগারেই নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি দর্শনার্থীদেরও তল্লাশি করে কারা চত্তরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। জেএমবি সদস্যদের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
স/আর