উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে নীরব কেন ইমরান খান?

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রমাণ করতে চান, বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনগোষ্ঠীর স্বার্থ নিয়ে তিনি বেশ সচেতন। কিন্তু, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের নির্যাতিত উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীদের ব্যাপারে কেন তিনি নীরব, এমন প্রশ্ন উঠছে চারদিকে। চীনের সঙ্গে ইমরান খান সরকারের মিত্রতা নীতির কারণে উইঘুর প্রশ্নে তিনি কোনো উচ্চবাচ্য করেন না বলে মনে করা হয়।

দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান তার আধিপত্য ঠিক রাখতে কিংবা অবস্থান বজায় রাখতে চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহায়তামূলক নীতিতে অগ্রসর হচ্ছে। দেশটির অন্যতম মিত্র শক্তি চীন এখন এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি। উভয় দেশের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিতে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশই চায় বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলতে। অন্যদিকে, চীন সরকার জিনজিয়াং প্রদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর ক্রমাগত নির্যাতন চালাচ্ছে এবং সেখানে মানবাধিকার চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে বলে বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু  চীন কর্তৃক উইঘুরের নির্যাতিত মুসলিমদের বিষয়টি এ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো বাধাই মনে হয়নি ইমরান খানের কাছে।

এদিকে, সারাবিশ্বে ইসলামভীতি ছড়িয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে ইমরান খান বিভিন্ন সময় বক্তব্য রেখেছেন। এর পাশাপাশি সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর বক্তব্যকে ইসলাম ধর্ম বিরোধী উল্লেখ করে সেটার বিরুদ্ধেও সোচ্চার ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে। এর অর্থ হল, তিনি মুসলিম বিশ্বে ইসলাম ধর্মের স্বার্থের বিষয়ে লড়াকু, এমন ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠায় নজর দিচ্ছেন। কিন্তু চীনের উইঘুর মুসলিমরা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সরকারের নিপীড়নের স্বীকার, সেই বিষয়ে আজ অবধি তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ওয়াাশিংটন পোস্টের বিশ্লেষক ইশান থারুর উইঘুর প্রশ্নে ইমরান খানের মুখ বন্ধ থাকাকে  ‘ভণ্ডামি’ আখ্যা দিয়েছেন।

কিছুদিন আগে ইমরান খান মুসলিম বিশ্বের নেতাদের উদ্দেশ্যে চিঠি লেখেন। এই চিঠিতে বিশ্বব্যাপী ইসলামভীতির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানান তিনি। মেহেদি হাসান নামের  একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, চীন উইঘুর মুসলিমদের ওপর যা করছে তা পাশ্চাত্যে ইসলামভীতির কাছে কিছুই না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ইমরান খান বা সহযোগীরা কি চীন সরকারের কাছে চিঠি লিখবেন বা তার পরিবর্তে কিছু করবেন?

ইমরান খানকে চীনা সরকার কর্তৃক উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতনের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন করা হলেও তার পক্ষ থেকে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে অথবা তিনি বা তার সরকার নীরব থেকেছেন। অথচ সারাবিশ্বে বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার কর্মীসহ সবাই সোচ্চার।  সূত্র: এএনআই।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ