ইলিশ নিয়ে বিপাকে জেলে

সারা মৌসুমে তেমন একটা ইলিশ ধরা পড়েনি বাগেরহাটের শরণখোলার জেলেদের জালে। এখন মৌসুমও প্রায় শেষ পর্যায়ে। আবার এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ইলিশের অবরোধ। কিন্তু ভরা মৌসুমে ইলিশ না মিললেও অবরোধের আগেরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইলিশ বোঝাই করে সাগর থেকে উঠে এসেছে ফিশিং ট্রলারগুলো। উপজেলার রাজৈর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশ বিক্রির ধুম পড়েছে। শেষ মুহুর্তে এত ইলিশ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন আড়ৎদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ট্রলারগুলো সাগর থেকে উঠতে শুরু করে। ঘাটে ভিড়েছে অর্ধশতাধিক ফিশিং ট্রলার। প্রত্যেক ট্রলারে কমপক্ষে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার করে ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ফিরেছে। জেলে শ্রমিকরা কেউ ব্যস্ত ট্রলার থেকে মাছ উঠাতে, কেউ ব্যস্ত ঝুড়িতে মাছ ভরতে। খুলনার মোকামে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ট্রাক-পিকআপ। জেলে-মহাজন-শ্রমিক কারোরই কথা বলার যেনো ফুরসত নেই।

এ সময় ব্যস্ততার ফাঁক গলিয়ে কথা হয়, মৎস্য আড়ৎদার মজিবর তালুকদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা মৌসুম ইলিশের দেখা নেই। শেষ ট্রিপে এসে ইলিশ ধরা দিয়েছে জালে। কিন্তু এই মুহুর্তে মাছ নিয়ে সবাই অস্বস্তিতে রয়েছে। মধ্যরাত থেকেই অবরোধ শুরু হবে। রাত ১২টার আগেই খুলনার মোকামে মাছ পৌঁছাতে না পারলে বিপদ হয়ে যাবে।

বাগেরহাট জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, এ বছর একেকজন জেলে-মহাজন তিন লাখ-চার লাখ টাকার লোকসানে আছে। এখন ট্রলার বোঝাই করে মাছ নিয়ে ফিরলেও জেলে-মহাজনদের মুখে হাসি নেই।

বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, অন্যান্য এলাকার জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও প্রত্যেক ট্রিপেই শূণ্য ট্রলার নিয়ে ফিরেছে শরণখোলার জেলেরা। এবার সবাই লোকসানে আছে। সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত জেলে-মহাজনদের প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানাই।

শরণখোলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ২২ দিনের ইলিশ অবরোধ। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, বিপনন ও মজুদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শেষ মুহুর্তে আহরিত ইলিশ নির্ধারিত সময়ের আগে বিক্রি করতে না পারলে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মজুর রেখে অবরোধ শেষে হলে বিক্রি করতে হবে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ