ইরানে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তিন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তারা হলেন- মাজিদ কাজেমি (৩০), সালেহ মিরহাশেমি (৩৬) ও সাঈদ ইয়াকুব (৩৭)।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত বছর ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় তিন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় তারা জড়িত ছিলেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বিচার বিভাগ এ কথা জানায়।

বিচার বিভাগের ওয়েবসাইট ‘মিজান অনলাইন’ বলেছে- মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইসফাহানে বিক্ষোভের সময় মজিদ কাজেমি, সালেহ মিরহাশেমি এবং সাঈদ ইয়াকুবকে বন্দুকের চিত্রাঙ্কনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। খবর এএফপির।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে গত বছর ১৬ নভেম্বর ইরানের কেন্দ্রীয় শহর ইসফাহান থেকে এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় সংঘর্ষ চলাকালে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

এর আগে গত জানুয়ারিতে ইরানের একটি আদালত কাজেমি এবং অন্য দুই ব্যক্তিকে ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রুতা’–এর জন্য দোষী সাব্যস্ত করেন। নভেম্বরে ইসফাহানে তিনজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন ওই আদালত।

বিবিসি জানায়, এটি একটি অস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত জাতীয় নিরাপত্তার অভিযোগ। চার দিন বিচারকাজ চলার পর তাদের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। গত সপ্তাহে ইরানের সুপ্রিম কোর্ট এই রায় বহাল রেখেছেন বলে দাবি করে ইরানের বিচার বিভাগ।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তারা অন্যায় বিচারের শিকার হয়েছেন এবং তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে দেশটিতে আরও চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। আরও ডজনখানেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইরানের সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, মাশার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির অন্তত ৫০টি শহরে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সহিংস বিক্ষোভে হতাহতের ঘটনা ঘটে। আটক করা হয় কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে।

ইরানের ডাস্টগার্ড কারাগারে এই তিনজনকে আটক রাখা হয়। কারাগার থেকে পাঠানো এক অডিও বার্তায় কাজেমিকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমি ঈশ্বরের শপথ করে বলছি আমি নির্দোষ। আমার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। নিরাপত্তাকর্মীরা আমাকে মারতে থাকেন এবং নির্দেশ দিতে থাকেন আমি যেন বলি যে এই অস্ত্রটি আমার। আমি তাদের বলি, তারা যা চায় আমি তাই বলব। শুধু দয়া করে আমার পরিবারকে যেন ছেড়ে দেয়।’

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরানের (সিএইচআরআই) মতে, তাদের যথাযথভাবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। প্রসিকিউটররা জোরপূর্বক ‘স্বীকারোক্তি’ আদায় করেছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি ‘পরিষ্কার’ ছিল না; যা প্রমাণ করে যে এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা ছিল।

সূত্র: যুগান্তর