ইউক্রেন পরিস্থিতির জন্য ন্যাটো দায়ী : সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, ইউক্রেন পরিস্থিতির জন্য দায়ী ন্যাটো। তিনি জানান, রাশিয়ার দোরগোড়ায় ন্যাটো বাহিনীর সম্প্রসারণের কারণে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে। দেশটির রাজধানী কেপটাউনে গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) পার্লামেন্টে এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইউক্রেন অভিযানের জন্য রাশিয়াকে নিন্দা জানানোর পশ্চিমা আহ্বানও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দিতে চাওয়ার ব্যাপারে বহুদিন ধরেই উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল মস্কো। এটাই ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান অভিযানের অন্যতম প্রধান কারণ।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে রুশ সেনাদের হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের ২৩তম দিন শুক্রবার পার্লামেন্টের বক্তব্যে রামাফোসা বলেন, এই যুদ্ধ এড়ানো যেত যদি ন্যাটো তার নিজের নেতা ও কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারি কানে নিত।

‘ন্যাটো যদি বছরের পর বছর ধরে তার নিজের নেতা এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে তাদের মস্কোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ যে বৃহত্তর অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে পারে, সে বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল।’ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘এই সংকটের কারণগুলো বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর অর্থ এই নয় যে, রাশিয়ার অভিযানের সঙ্গে আমরা একমত। আমরা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনকে প্রশ্রয় দিতে পারি না।’

প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধে চাইলে মধ্যস্থতা করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগেও চলমান পরিস্থিতির জন্য ন্যাটো এবং পশ্চিমাদের দায়ী করেছে রাশিয়ার একাধিক মিত্র দেশ।

উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও ন্যাটো তাদের সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখে। ১৯৯৯ সালে পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং চেক প্রজাতন্ত্র থেকে শুরু করে ওয়ারশ চুক্তির প্রাক্তন দেশগুলো এবং প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোকে এর সাথে যুক্ত করেছিল।

এরপর ২০০৪ সালে আরেকটি ধাপে বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া এবং স্লোভেনিয়াসহ, ২০০৯ সালে আলবেনিয়া এবং ক্রোয়েশিয়াকেও এর অন্তর্ভূক্ত করে। তারপর ২০১৭ সালে মন্টিনিগ্রো এবং ২০২০ সালে উত্তর মেসিডোনিয়া আসে ন্যাটো এবং ইউক্রেন ও জর্জিয়াকে এই ব্লকে যোগ দিতে আহ্বান জানায়।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন