ইউএনওর ওপর হামলা : ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪, তদন্ত কমিটি গঠন

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

ফরিদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান ও মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আসাদুজ্জামানসহ (৫০) চারজনকে গতকাল রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া অন্য তিনজন হলেন, মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম মৃধা (১৯), মো. প্রিন্স মোল্লা (৩২) ও কবিরুল বিশ্বাস (৪০)।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, গ্রেপ্তার চার আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে শুক্রবার দুপুরে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী রোববার (৭ মে) দিন ধার্য করে আসামিদের জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন।

মধুখালী থানা সূত্রে জানা গেছে, দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদী ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরীর গাড়ি চালক সুমন শেখ। অপর মামলার বাদী মধুখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রবীর কুমার সরকার।
দুটি মামলায় ২৭ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন নারী। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০-২৫০ জনকে।

গাড়ি চালক সুমন শেখের দায়ের করা মামলায় পথরোধ করে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে সাধারণ ও গুরুতর আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এসআই প্রবীর কুমার সরকারের দায়ের করা মামলায় সরকারি কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের হুকুম দানের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে ইউএনওর উপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত  নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ।  তবে তখন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

তদন্ত কমিটি গঠন

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার জানান, এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. লিটন আলীকে দিয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার এ কমিটি গঠন করে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু নিয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেন। তারা ওই জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্প চান না বলে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ইউএনও ঘটনাস্থলে গেলে তার দেহরক্ষী আনসার সদস্যদের সঙ্গে মানববন্ধনের ব্যানার নিয়ে নারীদের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে আইরিন নামে এক নারী আহত হন। অভিযোগ রয়েছে, আনসার সদস্য তাকে আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে আঘাত করায় এ ঘটনা ঘটে। পরে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে হামলা করলে ইউএনও, চালক, দেহরক্ষী, কাজের ঠিকাদার, চার নারী, চার পুলিশ সদস্যসহ মোট ১৫ জন আহত হন।