আষাঢ়ের প্রথম দিনে রাজশাহীতে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে গ্রীষ্মের দাবদহ ও ভ্যাপসা গরম প্রশমনের প্রাণষ্পর্শী বর্ষাঋতুর প্রথম দিন।  অর্থাৎ আষাঢ়ের প্রথম দিন।কিন্তু আবহাওয়া রয়েছে উল্টো কক্ষপথে। কারণ রাজশাহীতে আজ শুক্রবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস! যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

সূর্যের প্রখর কিরণে সকাল থেকে খালি মাথায় বাইরে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়ে। রোজাদার মানুষের প্রাণ খাঁচা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। গা্রম হাওয়ায় হাঁপিয়ে উঠেছে পশু-পাখিরাও।

রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে গত কয়েক দিন থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। বর্তমানে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভারী বৃষ্টি না হলে কমার সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছিল। কিন্তু শুক্রবার (১৫) জুন বেলা ৩টায় রাজশাহীতে ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ।

আগের খতিয়ান টেনে দেবল কুমার মৈত্র বলেন, এর আগে ২০০৫ সালের ১২ জুন রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৪ সালের ২১ মে উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৬ সালের ২৯ এপ্রিল উঠেছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে স্মারণকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বাড়লেও এখন পর্যন্ত ওই রেকর্ড ভাঙেনি।

এর ওপর শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর মূল শহরসহ অধিকাংশ এলাকাই রয়েছে লোডশেডিংয়ের কবলে। ফলে যারপরনাই ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই।

বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করে জুমার নামাজ শেষে প্রখর রোদ ও প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে পরিত্রাণ পেতে মহান আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়। বিশেষ প্রার্থনা করা হয় অঝোর ধারায় বৃষ্টির জন্য। তবে আকাশে মেঘের ছিটেফোঁটাও নেই। তাপপ্রবাহ মাথায় নিয়ে জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করেছেন রাজশাহীর মানুষ। অনেককে ছাতা মাথা নিয়ে কবরস্থানে গিয়ে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করতে দেখা গেছে।

এদিকে, অতিষ্ট গরমে ঈদের ছুটিতে রাস্তা-ঘাট দুপুরের পরথেকে ফাঁকা হয়ে পড়েছে। শেষ মুহূর্তে ঈদ বাজারে ধু ধু দুপুরে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব যা সন্ধ্যার পর স্বাভাবিক হয়।

স/অ