আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ ২০

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সোনারামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান সরকার ও ফরিদ মিয়া গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন টেঁটাবিদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।

এ সময় ৩টি বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

বুধবার দুপুরে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

টেঁটাবিদ্ধ আহতরা হলেন জয় মালা বেগম (৩৫), মোক্তার হোসেন (৩০), সাব মিয়া (৪০), জালাল মিয়া (৫০), সোহরাব হোসেন (৩০), দুলাল মিয়া (৩৫), কামাল মিয়া (৪০), সাইদ মিয়া (৩০), জিয়া উদ্দিন (৪০), নুরুল ইসলাম (৫০), সহিদ মিয়া (৬০), সাইদুর রহমান (২৫), ইউনুছ আলী (৪০), শিমুল (৩০), ইসমাইল হোসেন (৪০), খোকন মিয়া (৩৫), মোছেন মিয়া (৫০), ফরহাদ মিয়া (৪৫), ফারুক মিয়া (৪৫), মন্টু মিয়া (৪০), কামাল মিয়া (৩০)।

আহতদেরকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফরিদ মিয়ার সঙ্গে সোনারামপুর ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ সভাপতি একই গ্রামের প্রভাবশালী নেতা মতিউর রহমান সরকার ওরফে মতি মেম্বারের কয়েক দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।

এ নিয়ে বুধবার সকাল ১০টার সময় সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদে দুপক্ষের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। উভয়পক্ষের লোকজন বৈঠকে উপস্থিত হলেও বৈঠক শেষ না করে চলে যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে দুপক্ষ দেশি ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সময় ২০ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ৪০ জন আহত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে সোনারামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান সরকার জানান, সোনারামপুরে চেয়ারম্যান অফিসে বৈঠক শেষ না করে ফরিদ মিয়ার লোকজন চলে যায়। ফরিদ মিয়া, সুলতান মাস্টার, ইব্রাহীম, ছালাম মিয়া ও চাঁন মিয়ার নেতৃত্বে কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এই সময় আমাদের গ্রুপের ১৫-২০ জনকে টেঁটাবিদ্ধসহ আহত করে এবং ৩টি বাড়ি ভাঙচুর করে। আহতরা নরসিংদী হাসপাতালের ভর্তি রয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফরিদ মিয়া জানান, মতির সঙ্গে বিএনপির কিছু লোকজন যোগ দিয়েছে, তারা নির্বাচন সময় থেকে নানা রকম উসকানি দিয়ে আসছে। আজ কোনো কারণ ছাড়া আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করেছে। আমাদের পক্ষের ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন।

সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জানান, ফরিদ ভাই ও মতি ভাইয়ের দলের মধ্যে সমস্যা চলে আসছিল। বুধবার আমার অফিসে দুই দলের ২০ জন করে আসতে বলি। বৈঠক শেষের আগে দুপক্ষের লোকজন শান্তিপুর গ্রামে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে দুই দলের প্রায় ২৫-৩০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫-২০ জন টেঁটাবিদ্ধ। বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী জানান, শান্তিপুরের সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে আমিসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।