আর কত বয়স হলে পাবো বয়স্ক ভাতা !

বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘার পদ্মার ভাঙ্গনে বাড়িহারা মিরজান বেওয়া ১০৫ বছর বয়সেও পাননি বয়স্ক ভাতার কার্ড। প্রায় ২৫ বছর আগে স্বামী জয়েন উদ্দিন মারা গেছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ছেলে সিদ্দিক আলীর সাথে আছেন। এখন পর্যন্ত তার কপালে জোটেনি সরকারি বিধবা ভাতাও।
মিরজান বেওয়া থাকেন বাঘা পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চকরাজাপুর চরে। পরপর তিন বার বাড়িঘর পদ্মায় বিলিন হয়ে গেছে। প্রথমে মানিকের চরে বাড়ি ছিল। সেখান থেকে চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে বাড়ি করে। সেখানে কয়েক বছর বসবাস করার পর চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যলয় থেকে প্রায় ৫০০ মিটার পূর্ব-দক্ষিণ কনে বাড়ি করে।
সেখান থেকে পদ্মার ভাঙ্গনে গত ৩০ জুলাই বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বাড়ির উত্তর দিকে বাড়ি করছে। বাড়ি ঘরের দরজা নেই। জানালা নেই। আছে একটি নড়বড়ে চকি। তার একটি ছেলে সিদ্দিক আলী দিন মুজুর। দিন আনে দিন খায়। ৫ সদস্যের সংসার।

বিধবা মিরজানের স্বামী জয়েন উদ্দিনের সাত বিঘা জমি ছিল। এই জমি রাক্ষুসে পদ্মা কয়েক বছরে গিলে নিয়েছে। এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিধবা মিরজান একা দাড়াতে পারে না। অন্যের সাহায্য নিয়ে চলাফেরা করতে হয়।
ছেলে সিদ্দিক আলী সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বাবার সাত বিঘা জমি পদ্মায় বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে নিঃস্ব হয়ে গেছি। কেউ কখনো সহযোগীতা করেনি। আমার মায়ের বয়স প্রায় ১০৫ বছর। মাকেও কোন সহযোগীতা করা হয়নি। আমার মা অসুস্থ তার জন্য প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ টাকার ওষুধ লাগে। সামান্য আয় দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। তবে ৩০ জুলাই বাঘা উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা স্যার ত্রাণ দিতে এসেছিল। সেখানে আমাকে ১০ কেজি চাউল, দুই কেজি চিড়া ও আধা কেজি গুড় দিয়েছে। এই দিয়ে কয়েকদিন চলবে। আর এখন বাড়িঘর সরানো নিয়ে ব্যস্ত আছি। অন্যের কাজ করে সংসার চালায়। এখন কাজেও যেতে পারছিনা। সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।
আক্ষেপ করে মিরজান বেওয়া বলেন, ‘আর কতো বয়স হলে বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড পাওয়া যাবে। আমরা গরীব তাই আমাদের কোন দাম নেই’।
চররাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, তার নামে বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড নেই জানা ছিল না। আমি সবে মাত্র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলাম। সঠিকভাবে দায়িত্ব এখনো হাতে আসেনি। তবে পরবর্তীতে তার কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারের মাধ্যমে দেওয়া হয়। তারা যে তালিকা দেয় সেভাবে কার্ড নির্ধারণ করা হয়।
স/শ