আফগান বিদ্রোহীর ব্রিটেনে শিক্ষিত ছেলে, মেরেছে ১০০ তালেবানকে

প্রয়াত তালেবান বিরোধী কিংবদন্তী তাজিক নেতা আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ ব্রিটেনে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন। তিনি আফগানিস্তানে তালেবানবিরোধী রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ব্যাপারে সশস্ত্র বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ডেইলি মিরর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ডেইলি মিররের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে এখন পর্যন্ত কতজন হতাহত হয়েছে, সে ব্যাপারে এখনো নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এরই মধ্যে তাতের হাতে ৬০ থেকে ১০০ জন তালেবান নিহত হয়েছে।

আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ জানিয়েছেন, শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত তার বিদ্রোহী সেনারা লড়াই করবে।

তিনি আরো বলেছেন, তালেবানরা কেবল আফগানিস্তানের মানুষের একার সমস্যা নয়। তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে আফগানিস্তান হবে উগ্র ইসলামী সন্ত্রাসবাদের মূল ভূখণ্ড। এখানে আবারো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হবে।

ওয়াশিংটন পোস্টে পাঠানো এক চিঠিতে অস্ত্র ও সহায়তা চেয়ে তিনি লিখেছেন, মুজাহিদদের নিয়ে আমি আমার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চাই।  মুজাহিদরা আবারো তালেবানদের মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।

জানা গেছে, ৯০ এর দশকে পাঞ্জশির কেন্দ্র করে নর্দার্ন অ্যাল্যায়ান্স নামে তালেবান বিরোধী সামরিক জোট গড়ে উঠেছিল। তখনকার সাথে অবশ্য বর্তমানের বাস্তবতার অনেক পার্থক্য।

ওই সময় তালেবান বিরোধী নেতারা উত্তরের সীমান্ত পর্যন্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। ফলে লড়াইয়ের জন্য সরবরাহ পেতে তাদের অনেক সুবিধা হতো।

কিন্তু এখন পাঞ্জশির উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও উত্তরের প্রধান প্রধান শহর এবং সীমান্ত এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। ওই সব এলাকার বহু জাতিগত তাজিক এবং উজবেক গোষ্ঠী নেতা কাবুলের সরকারের ব্যাপারে বিরক্ত হয়ে গত বছরগুলোতে তালেবানে যোগ দিয়েছেন।

সাবেক আফগান কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে নিই ইয়র্ক টাইমস বলছে, পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবান বিরোধী ২০০০ থেকে ২৫০০ যোদ্ধা আছে এবং তাদের হাতে সাধারণ হাল্কা রাইফেল রয়েছে।

অবশ্য আহমেদ শাহ মাসুদের যে সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব বা গ্রহণযোগ্যতা ছিল আমরুল্লাহ সালেহ বা মাসুদের ছেলের তা নেই। বিভিন্ন মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন এমন সব খবর বের হচ্ছে যে, সালেহর সাথে কোন জোট তৈরির সম্ভাবনা অস্বীকার করেছেন আহমেদ মাসুদ।

কাবুল থেকে পালিয়ে যাওয়া আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ তার গোপন আস্তানা থেকে ঘোষণা করেছেন দেশের সংবিধান অনুযায়ী তিনিই এখন আফগানিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট এবং তিনি তালেবানের সরকার মানবেন না।

সালেহ একসময় আফগানিস্তানের গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন, তালেবানের বিরুদ্ধে জোট তৈরি করে প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুমকি দিয়েছেন।

তিনি দাবি করেছেন, তার সাথে রয়েছেন প্রয়াত তালেবান বিরোধী কিংবদন্তী তাজিক নেতা আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ এবং সাবেক আফগান সেনা প্রধান ইয়াসিন জিয়া।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সালেহ এবং তার সহযোগীরা প্রয়াত আহমেদ শাহ মাসুদের দুর্গ হিসেবে পরিচিতি উত্তরের পাঞ্জশির উপত্যকায় রয়েছেন।

কাবুলের উত্তরে জাতিগত তাজিক অধ্যুষিত দুর্গম এই জায়গাটি ১৯৮০র দশকে সোভিয়েত বিরোধী এবং পরে ৯০ এর দেশকে তালেবান বিরোধী প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ