আফগান নারীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র!

আফগানিস্তানের নারীরা অভিযোগ করেছেন তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজ।

জিনিউজের খবরে দেশটির নারী অধিকারকর্মী ফায়িজা কুফির বরাত দিয়ে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারকে নারীদের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করা হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

তিনি বলেন, আফগানিস্তানের মহিলাদের শিয়রে এখন বিপদ। গত ২০ বছরে মেয়েরা অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। যে শহরগুলি তালেবান দখল করেছে সেখানে মহিলারা কার্যত বন্দি হয়ে পড়েছেন।

জি নিউজের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আফগান মেয়েদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে আজীবন লড়াই করে গিয়েছেন সর্দার-ই-কাবুলি গার্লস হাইস্কুলের অধ্যক্ষ নাসরিন সুলতানি। তালেবানি হুমকির মুখেও পড়েছেন। এখন আকুল পাথারে।

অধ্যক্ষ নাসরিন সুলতানি বলেন, এত বছর ধরে মেয়েদের পড়াশুনো করতে উৎসাহ জুগিয়ে এসেছি। তাদের দিকে তাকাতে পারছি না। দুশ্চিন্তা হচ্ছে। চেষ্টা করেছি। কিন্তু এই পরিস্থিতি থেকে মেয়েদের বের করতে পারিনি।

শির খান বন্দর দখলের পর ফতোয়া দিয়েছে তালেবান। বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছেন না মেয়েরা। স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন সাজেদা। তালেবানি ফতোয়ায় তিনি গৃহবন্দি। তাঁর কথায়,’বহু মহিলা সেলাই ও জুতো তৈরির কাজে যুক্ত ছিলেন। এখন তাঁরা সন্ত্রস্ত।’

ইমামদের কাছে ১৫-র ঊর্ধ্বে তরুণী ও ৪৫ বছরের কম বয়সী বিধবাদের তালিকা চেয়েছে তালেবান। সেই সব মেয়েদের বিয়ে করবে তালেবানি জঙ্গিরা। তাজিকিস্তানের সীমান্তের কাছে ইবান জেলায় তালেবানিরা স্থানীয়দের মসজিদে জড়ো করে। নির্দেশ দেওয়া হয়, লাল ও সবুজ পোশাক পরা যাবে না। দাঁড়ি কামানো যাবে না। পাগড়ি পরা বাধ্যতামূলক। ষষ্ঠ শ্রেণির পর মেয়েরা স্কুলে যেতে পারবে না।

জিনিউজ জানায়, গত মাসেই কান্দাহারের আজিজি ব্যাংকে ঢুকে পড়ে তালেবানরা সেখানে কর্মরত ৯ জন নারী কর্মীকে ভয় দেখিয়ে বাড়ি পাঠায়। হুমকি দেওয়া হয়, কাজে আসা চলবে না। ঘরেই থাকতে হবে। হেরাত শহরের মিল্লি ব্যাংকেও একই ঘটনা ঘটেছে।

আজিজি ব্যাংকের কর্মী নুর খতেরা বলেন, কষ্ট করে ইংরেজি ও কম্পিউটার চালানো শিখেছিলাম।

নারীদের নিয়ে কী ভাবছে তালেবান 

নারীদের নিয়ে এবার অনেকখানি নরম অবস্থান নিয়েছেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।

তিনি বলেন, মহিলাদের ব্যাংকে কাজ করতে দেওয়া হবে কিনা এনিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ইসলামিক আইন প্রণয়নের পর চূড়ান্ত হবে।

১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তালেবানি শাসনে নারীদের শিক্ষা ও কাজের অধিকার ছিল না। বিতর্কিত সেই শাসনই ফিরতে চলেছে নাকি নতুন কোনো সংস্কার আনবে তাদের শাসনে তা সময়ই বলে দেবে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর