আফগানিস্তানে আটকেপড়া ১২ বাংলাদেশির মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশি কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করছেন। এ ছয়জন বাংলাদেশি আফগানিস্তানের টেলিকম কোম্পানি আফগান ওয়্যারলেসে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাদের একজন রাজিব বিন ইসলাম শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় টেলিফোনে যুগান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাকিরা কোথায় জানতে চাইলে রাজিব বলেন, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। কাউকে অনলাইনে পাইনি।
তার আগে রাত সাড়ে নয়টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ১২ বাংলাদেশি ও আফগান ছাত্রীরা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছেছেন। শিগগিরই তারা ভাড়া করা বিমানে বাংলাদেশে আসবেন।
তালেবানের অনুমতি না পাওয়ায় চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ১৬০ জন আফগান ছাত্রী কাবুল এয়ারপোর্টের ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না। অভাবনীয় দুর্ভোগ ও উৎকণ্ঠায় বিমানবন্দরের বাইরে সময় কাটিয়ে তারা এখন বাংলাদেশে রওনা হবার অপেক্ষায় আছেন।
দেড় বছর আগে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলে এসব আফগান মেয়েরা নিজ দেশে যান। এখন বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়টি খোলার প্রস্তুতি শুরু হওয়ায় তারা চট্টগ্রামে ফিরতে গিয়ে বিপাকে পড়েন।
আফগানিস্তানের সর্ববৃহৎ টেলিকম কোম্পানি আফগান ওয়্যারলেসে কাজ করতেন বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার রাজিব বিন ইসলাম। তিনি শুক্রবার কাবুল থেকে টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেছিলেন, কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকতে গতকাল আমরা ৬/৭ বার চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু সফল হইনি। মার্কিন বাহিনী ও তালেবানের উভয়ের অনুমতি ছাড়া কেউ সেইফ প্যাসেস পাচ্ছেন না। আমরা সেইফ প্যাসেজের অপেক্ষায় আছি।
আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর বিভিন্ন দেশ নিজ নিজ নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বিশেষ করে মার্কিন সৈন্য, দূতাবাস কর্মী, মার্কিন বাহিনীতে কর্মরত অনুবাদকসহ অপরাপর কর্মী ও তাদের পরিবারবর্গকে আফগানিস্তানের বাইরে নিয়ে আসার জন্য কাবুল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দিতে ৬০০০ হাজার মার্কিন সৈন্য, ১০০০ ব্রিটিশ সৈন্য এবং ন্যাটো সৈন্যরা মোতায়েন আছেন।
আফগান ছাত্রীদের বাংলাদেশে আনার জন্য জাতিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআর একটি সুপরিসর এয়ারক্রাফট ভাড়া করেছে। মার্কিন বাহিনী ও তালেবানের অনুমতি পেলে তাদেরকে নিয়ে বিমানটি বাংলাদেশে আসবে। বিমানটিতে কিছু আসন খালি থাকায় আফগানিস্তানের একটি টেলিকম কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার ও ব্র্যাকে কর্মরত বাংলাদেশি যারা এখন আটকে পড়েছেন; তারাও দেশে ফিরবেন।
রাজিব জানান, মার্কিন বাহিনী ও আফগান কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে আফগান ওয়্যারলেস কোম্পানিটি চালু করেছে।
জানতে চাইলে রাজিব বলেন, কাবুলের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক। গাড়ি চলছে, দোকানপাট খুলেছে। রাস্তায় তালেবানের টহল আছে। ভয়ভীতি ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে।
রাজিব বিন ইসলাম বলেন, সেইফ প্যাসেস পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এদিকে, আফগানিস্তানে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের জন্য পরিবারে বেশ উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
সূত্রঃ যুগান্তর