আন্তর্জাতিক আদালতে লড়তে রোববার হেগের পথে সু চি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর সেনাবাহিনীর গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) হেগের আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) প্রথম শুনানি হবে।

মিয়ানমারের ডিফ্যাক্টো সু চি এতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। আদালতের শুনানিতে উপস্থিত থাকতে হেগের উদ্দেশে রোববার মিয়ানমার ছেড়েছেন সু চি।

এ ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী এ রাজনীতিবিদের ভাবমূর্তি আরও ক্ষুণ্ণ করবে বলে মনে করা হলেও দেশে তার সমর্থন আরও সুসংহত হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সু চির পক্ষে একের পর এক সমাবেশ হয়েছে। ২০১৬ সালে শেষবার মিয়ানমারের এ ডিফ্যাক্টো নেত্রীর পশ্চিম ইউরোপ সফরে তাকে বরণ করা হয়েছিল গণতন্ত্রের মানসকন্যা হিসেবে।

তার দেশে অর্ধশতকের সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে বেসামরিকদের হাতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব তুলে দেয়ার মূল দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিন বছর পর আগামী সপ্তাহে সু চি একই মহাদেশে ফিরবেন তার একসময়কার প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাবাহিনীর ‘গণহত্যার’ পক্ষে সাফাই গাইতে।

২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় ‘বিদ্রোহীদের’ কথিত হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল।

গত দুই বছরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের কথায় উঠে আসে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ, যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে জাতিসংঘ।

রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নালিশ গেছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর জোট ওআইসি’র সমর্থনে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া নভেম্বরে জাতিসংঘের আদালত আইসিজে’তে মামলা করেছে।

গাম্বিয়া তাদের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের আবাসন ধ্বংসের কথা বলেছে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে। তারা বলছে, গণহত্যা বা জাতিগত নিধনযজ্ঞ নয়, তাদের অভিযান নিরাপত্তা বাহিনীর টহল চৌকিতে হামলা চালানো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে।

১০ ডিসেম্বরে আইসিজে’র ওই মামলার প্রথম শুনানি শুরু হচ্ছে। মিয়ানমারের ‘জাতীয় স্বার্থ রক্ষায়’ ওই মামলায় লড়তে কয়েকদিনের মধ্যেই সু চি নেদারল্যান্ডসের হেগের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন বলে তার কার্যালয় নিশ্চিত করেছে।