আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিক্ষকের সভাপতি পদে যোগদান

রাবি প্রতিনিধি:
আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি পদে শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তিনি সভাপতির পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ নিয়ে বিভাগের অন্য শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এতে বলা হয়, ‘আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলামকে প্রেষণে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগে স্বপদে ও স্ববেতনে স্থানান্তর করা হল এবং ২৫ এপ্রিল থেকে তিন বছরের জন্য আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি নিয়োগ করা হল।’

পরে চিঠিটি আইন বিভাগ এবং আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগে পাঠালে শিক্ষকরা এ নিয়ে কথা তোলেন। তাদের দাবি সভাপতি পদে রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া বৈধ নয়। আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী সভাপতি পদে এই নিয়োগ অবৈধ।’

বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশের ২৯ ধারায় বলা আছে, ‘সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই বিভাগটি গঠিত হবে। শিক্ষকদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এবং পদমর্যাদায় সহকারী অধ্যাপকের নিচে নয় এমন কাউকে বিভাগের সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হবে।’ তবে অন্য বিভাগের কাউকে আরেকটি বিভাগে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া যাবে কি না সে বিষয়ে কোন কিছু বলা হয়নি।

এরই প্রেক্ষিতে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) শাহরিয়ার পারভেজ বাদী হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী এবং রফিকুল ইসলামকে বিবাদী করে রাজশাহী জজ কোর্টে মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই বিচারক মনিরুজ্জামান সভাপতি পদে রফিকুল ইসলামের যোগদানের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বা অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালত গতকাল (২৫ এপ্রিল) সকালে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠায়।

জানা গেছে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ চালু করা হয়। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শাহরিয়ার পারভেজ ২০০৯ সালে বিশ^বিদ্যালয় আইন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৬ সালে ৪৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় ৫৯তম সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে আইন বিভাগ হতে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগে স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সভাপতি হওয়ার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ না দিয়েও রফিকুল ইসলামকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া অবৈধ নয় দাবি করে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় আগে ওই বিভাগে প্রেষণে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে স্থানান্তর করেছেন। তারপরেই আমাকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন।’

রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীর মন্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।