আদমদীঘিতে চালককে হত্যা করে অটোভ্যান বিক্রি, গ্রেপ্তার-৪

আদমদীঘি প্রতিনিধি :
বগুড়ার আদমদীঘিতে হাত-পা বাঁধা ও গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া শামীম আলম (২৭) নামে এক অটোচালকের লাশ উদ্ধারের ঘটনার দুই মাস পরে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার চারজনের তিনজন হত্যা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ও গামছা পার্টির সক্রিয় সদস্য। পুলিশ শনিবার দিনব্যাপী আদমদীঘি উপজেলা ও জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার জিনইর গ্রামের রানা (২৫), জনি (১৯), কোমারপুর গ্রামের মিঠু (২২) এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ঢেকুঞ্চা গ্রামের শাহীন (৩৫)।

বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রবিবার সকাল ১১টায় পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা মাত্র ১০ হাজার টাকায় অটোভ্যান বিক্রির জন্য চালককে হত্যা করে। এঁরা মূলত পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। অটোরিকশা ও অটোভ্যান ছিনতাইয়ের পর বিক্রয় করার জন্য তারা একটি চক্র গড়ে তোলেন। গত ২৪ জুন সকাল ৮টার দিকে উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের ধনতলা এলাকার ধানক্ষেতে শামীম আলম (২৭) নামের অটো চালকের হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ পাওয়া যায়। ওই সময় নিহতকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা অটোরিকশা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করেছে বলে ধারণা পাওয়া যায়। পরে নিহতের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলম আদমদীঘি থানায় দুর্বৃত্তদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলার দুই মাস পরে আদমদীঘি থানা পুলিশ ঘটনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ও তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য শনিবার আদমদীঘি উপজেলা ও জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ড ও ছিনতাইয়ে জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরও জানান, ২৩ জুন পরিকল্পনা অনুযায়ি গামছা পার্টির সদস্যরা উপজেলার বাসষ্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশনে মিলিত হয়ে নিহত শামীম আলমের অটো চার্জার ভ্যান গাড়ীটি প্রথমে উপজেলার কড়ই বাজারে যাওয়ার জন্য ভাড়া করে। পরে কড়ই বাজারে পৌঁছানোর পরে তাকে নশরতপুর বাজারে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। প্রথমে ভ্যান গাড়ীর চালক যেতে অস্বীকৃতি জানালেও তাদের অনুরোধে যেতে রাজি হয়। পথিমধ্যে গামছা পার্টির একজন সদস্য প্রাকৃতিক ডাকের কথা বলে ফাঁকা স্থানে ভ্যান গাড়টি থামায় এরপর তারা পিছন থেকে গলায়া গামছা পেঁচিয়ে ধরে এবং অন্যান্য আসামীরা পায়ে এবং হাতে রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তার নিচে পতিত জমিতে শ্বাসরোধ করে শামীমকে হত্যা করে। পরে তারা শামীমের মোবাইল ও ভ্যান গাড়ীটি নিয়ে চলে যায়। হত্যার পরের দিন ২৪ জুন সকালে গামছা পার্টির সদস্যরা অটোভ্যান গাড়ীটি জয়পুরহাটের শাহীনের কাছে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। পরে ওই ১০হাজার টাকার মধ্যে গ্রেপ্তার মিঠু ৩ হাজার ও অন্য দুই আসামিরা ১ হাজার টাকা করে ভাগে করে নেয়।

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দীন জানান, গ্রেপ্তার গামছা পার্টির সদস্যরা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম চালাতো। তাদের সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা বিষয়টি জানার জন্য গ্রেপ্তারকৃতদের ৭দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। পাশাপাশি এই ধরণের আরও সব চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।