আত্রাইয়ে ১১ মাসেও সংস্কার হয়নি বন্যায় বিধ্বস্ত বাঁধ

আত্রাই প্রতিনিধি:

নওগাঁর আত্রাইয়ে গত বছরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের ফলে উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী ফুলবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ বন্যায় বিধ্বস্ত হওয়ার র্দীঘ ১১ মাসেও মেরামত হয়নি। ফলে ওই এলাকার হাজার হাজার জনগন তাদের আবাদি ফসল নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে।

 
তথ্যঅনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছরের ২৩ আগস্ট ভোর রাতে ভয়াবহ বন্যায় আত্রাইয়ের ফুরবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার পর মির্জাপুর নামক স্থানে আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক ভেঙে আশেপাশের এলাকার সমুদয় ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। সেই সাথে এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। এতে আত্রাই-রাণীনগর উপজেলার প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রায় ২ মাস পরে বন্যার পানি নেমে যায়। এদিকে বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার ১১ মাস পার হলেও আজও ভাঙ্গন মেরামত করা হয়নি। এ ভাঙ্গন মেরামত না করায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাইপুর, ডাঙ্গাপাড়া, ফুলবাড়ি, উদনপৈয়, মিরাপুরসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে সপ্তাহে দুইদিন শনিবার ও মঙ্গলবার ভবানীপুর-মির্জাপুর হাটে যাবার জন্য এ পথ ব্যবহার করতে হয়। তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য এ পথ দিয়েই হাটে বাজারজাত করতে হয়। গত বন্যার পর থেকে তারা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছে না। এদিকে দ্রুত এ ভাঙ্গন মেরামত করা না হলে আগামী বন্যা মৌসুমে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। এ ছাড়াও আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পরেছে, এলাকার হাজার হাজার কৃষক তাদের আবাদি ফসল নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে।

index.jpg64 copy
মিরাপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস জানান, আমরা এ ভাঙ্গন মেরামতের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান  মেম্বারসহ অনেকের কাছেই ধর্না দিয়েছি। সকলেই আশ্বস্ত করেন কিন্তু আজও মেরামত না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমের আগেই সেখানে পানি জমা হয়েছে। এবং বাঁধটি মেরামত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে ফলে আমরা আমাদের কষ্টের ফসল নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছি।

 
ভবানীপুর জি এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান বলেন, গত বছরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ফুরবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার ফলে এ রাস্তার উপর দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীর চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন সেখানে নৌকা ছাড়া পারাপার হওয়া যায় না। রাস্তাটি সংস্কার করা অতি জরুরী।

 
একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন,  আসন্ন বন্যা মৌসুমের আগে বাঁধটি মেরামত করা না হলে আমাদের মাঠে কোন আবাদ হবে না। কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে চিকিৎসা সেবা ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দিন দিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। তিনি দ্রুত বাঁধটি নির্মাণের জন্য উর্ধ্বোতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

 
স্থানীয় নব নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাবু সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, গত বছরের বন্যায় সড়কটি বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে এলাকার জনগণকে দীর্ঘ দিন থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরকারি বরাদ্দ সাপেক্ষে যত দ্রুত সম্ভব বাঁধটি পুননির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

স/অ