আত্রাইয়ে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত

আত্রাই প্রতিনিধি: আত্রাই, রাণীনগর ও বাগমারা এই তিন উপজেলার মোহনায় অবস্থিত আত্রাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন রেলওয়ে স্টেশন আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। এ স্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে আবারও লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও রেললাইন অবরোধ করে ট্রেন দাঁড় করানোসহ বিভিন্ন কর্মসূচীতে মুখর এখন আত্রাইয়ের আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। গত চারদিন ধরে প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন আসা পর্যন্ত এসব কর্মসূচী পালিত হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দুপুরে আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। এ সময় ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্স্রপ্রেস ট্রেন আসলে আন্দোলনকারীদের অবরোধের মুখে চালক ট্রেন থামিয়ে দেন। প্রায় ১০ মিটিন বিরতির পর আবার ট্রেন ছেড়ে চলে যায়।

এদিকে আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজের দাবি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আত্রাই উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ এবাদুর রহমান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম।

জানা যায়, নওগাঁ জেলার বৃহৎ আত্রাইয়ের আহসানগঞ্জ ষ্টেশনের উপর দিয়ে প্রতিদিন ঢাকাগামী ৫টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করলেও মাত্র একটি ছাড়া ঢাকাগামী অন্য কোন ট্রেনের স্টপেজ এখানে নেই। ফলে ঢাকাগামী যাত্রীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে কেবলমাত্র নীলসাগর এক্সপ্রেসের স্টপেজ এ ষ্টেশনে রয়েছে। এতে আসন সংখ্যা বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৪৬টি। অথচ আত্রাই থেকে প্রতিদিন ঢাকা যাতায়াত করেন প্রায় ২ শতাধিক যাত্রী। ফলে সীমিত সংখ্যক আসনের জন্য হিমশিম খেতে হয় ষ্টেশন কর্তৃপক্ষকেও। এদিকে নীলসাগর এক্সপ্রেস ছাড়াও আত্রাইয়ের উপর দিয়ে প্রতিদিন দ্রুতযান এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস এবং একতা এক্সপ্রেস নামে আরও ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। সম্প্রতি যোগ হয়েছে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস নামে আরও একটি আন্তঃনগর ট্রেন। অথচ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি সত্বেও এসব আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ কার্যকর না হওয়ায় একদিকে যাত্রীরা হচ্ছেন দুর্ভোগের শিকার, অন্যদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব আয় থেকে।

এদিকে আত্রাইয়ে আন্তঃনগর ট্রেনের বিরতির দাবিতে গত ২০১৬ সালেও এমন আন্দোলন করেছিলেন এলাকাবাসী। মাসাধিককাল আন্দোলনের পরও দাবি পূরণ না হওয়ায় দিনে দিনে আন্দোলনে ভাটা পড়ে যায়। একই দাবিতে আবারও সোচ্চার হয়েছেন এলাকাবাসী। দাবি আদায়ের জন্য পালিত হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচী। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দুপুরে আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। এ সময় ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্স্রপ্রেস ট্রেন আসলে আন্দোলনকারীদের অবরোধের মুখে চালক ট্রেন থামিয়ে দেন। প্রায় ১০ মিটিন বিরতির পর আবার ট্রেন ছেড়ে চলে যায়।

এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ এবাদুর রহমান বলেন, দ্রুত আহসানগঞ্জ ষ্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনটি যাত্রা বিরতি ঘোষণা না করা হলে আগামীতে অবরোধসহ কঠিন কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে। এছাড়াও এ স্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের আসন সংখ্যা বৃদ্ধিসহ স্টেশনে যাত্রীসেবার মানবৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম বলেন, বর্তমানে এ স্টেশনে প্রতি মাসে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয় হয়। ঢাকাগামী অন্যান্য ট্রেনের এবং খুলনাগামী আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেসের স্টপেজ কার্যকর হলে রাজস্ব আয় অনেক গুণ বেড়ে যাবে। যেখানে সরকারের রাজস্ব বাড়বে এবং এলাকাবাসীর উপকার হবে। সেখানে এ ট্রেনগুলোর স্টপেজ দিতে আপত্তি কোথায়?

স/শা