আজ রাণীনগরের আতাইকুলা গ্রাম গণহত্যা দিবস

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর প্রতিনিধি:


আজ (২৫ এপ্রিল) রবিবার নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামে গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী আতাইকুলা গ্রামে গণহত্যা চালায়। এ হামলায় হানাদার বাহিনীর হাতে এক সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছিলেন আতাইকুলা গ্রামের ৫২ জন মুক্তিকামী মানুষ।



রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তীরে মিরাট ইউনিয়নের নিভৃতপল্লী আতাইকুলা পালপাড়া গ্রাম। ১৯৭১ সালে ২৫ এপ্রিল পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর দল ওই দিন সকাল ৯ টার দিকে এই গ্রামের পূর্বদিকে কুজাইল বাজারে অবস্থান নেয়। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকিস্থানের পতাকা হাতে নিয়ে ‘পাকিস্থান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে ধীরে ধীরে নদী পার হয়ে আতাইকুলা গ্রাম ঘিরে ফেলে।

অবস্থা বেগতিক দেখে ওই গ্রামের কিছু লোক বাড়ি-ঘর ফেলে রেখে নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতীরা যে যার মতো পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু স্থানীয় রাজাকার আলবদররা তাদেরকে বাধা দেয়। এরপর আতাইকুলা পালপাড়া গ্রামের নারী-পুরুষকে ধরে ধরে যগেশ্বর পালের বৈঠকখানার আঙ্গিনায় জড়ো করে। শুরু হয় পাকিস্থানী সেনাদের নির্যাতন। তারা সেদিন ওই গ্রামে দিনভর ঘরে ঘরে হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে। এর পর বৈঠকখানার আঙ্গিনায় বন্দিদের ওপর মেশিনগান দিয়ে ব্রাশফায়ার চালানো হয়। এতে শ্রী গোবিন্দ চরন পাল, জগেন্দ্রনাথ, শুরেশ্বর পাল তার পুত্র প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার পাল, শুনিল কুমার পালসহ ৫২ জন প্রাণ হারায়।

রাণীনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা (ভারপ্রাপ্ত) কমান্ডার অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন বলেন, করোনার কারনে এবার আমরা (মুক্তিযোদ্ধারা) কর্মসূচীতে অংশ নিতে পারছিনা। তবে শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথভাবে দিবসটি পালন করবে।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, দিবসটি পালনে সরকারীভাবে কোন নির্দেশনা না থাকায় উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে কোন কর্মসূচী নেওয়া হয়নি। তার পরেও খোঁজ খবর নিয়ে দিবসটি যথাযথভাবে পালনে সহযোগীতা করার চেষ্টা করব।

শহীদ শ্রী গোবিন্দ চরন পালের ছেলে গৌতম চরন পাল বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদের স্মৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, গীতাপাঠ ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করব।