আজ বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি ফুটবল ম্যাচ : কার কেমন শক্তি?

সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক:

বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২ ও এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের একটি ম্যাচে বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হচ্ছে মঙ্গলবার।

কলকাতার বিখ্যাত একটি ফুটবল খেলার স্টেডিয়াম সল্টলেকে রাত আটটায় মুখোমুখি হবে দু্‌ই দল।

আশি হাজারেরও বেশি ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটি আজ সম্ভবত হাউসফুল হতে যাচ্ছে। কারণ এরইমধ্যে ম্যাচটির সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ও ভারত দুদলের র‍্যাঙ্কিংয়ে বেশ বড় পার্থক্য।

ভারত আছে ফিফার তালিকায় ১০৪ নম্বরে, বাংলাদেশ রয়েছে ১৮৭ নম্বরে।

তবু বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার শেষ দুটো ম্যাচ হয়েছে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে, যেই দুটো ম্যাচ ১-১ ও ২-২ গোলে ড্র হয়েছে।

এরপর প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময়ে দু দল মুখোমুখি হয়নি।

কিন্তু ২০১৪ সালে ভারত ছিল র‍্যাঙ্কিংয়ের ১৭১ নম্বর স্থানে এখন আছে ১০৪ এ।

 

যেসব বিষয় দুদলের মধ্যে ব্যবধান গড়ে তুলতে পারে:

বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার ম্যাচ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে দু’দলের প্রেস কনফারেন্সে।

ভারতের ইউক্রেনিয়ান কোচ আইগর স্টিম্যাকের মতে, কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যকার ম্যাচে দৃশ্যত বাংলাদেশ ২-০ গোলে হারলেও, আক্রমণের দিক থেকে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ, শুধুমাত্র যথাযথ ফিনিশারের অভাবে জয় পায়নি।

কলকাতায় ম্যাচটি কাভার করতে গিয়েছেন বাংলাদেশের একজন ফুটবল সাংবাদিক সাদমান সাকিব, তিনি মনে করেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অভাব সত্যিকারের নম্বর নাইনের, অর্থাৎ ফরোয়ার্ডের।

ফুটবল, বাংলাদেশ, ভারত
সুনীল ছেত্রী, ভারতের তারকা ফুটবলার

“ভারত কোচ বলেছেন, কাতারের বিপক্ষে ম্যাচটিতে বাংলাদেশ যোগ্যতর দল ছিল, দুর্বলতার জায়গা হচ্ছে বাংলাদেশের স্ট্রাইকার নেই।”

বাংলাদেশের রক্ষণভাগ এই মুহূর্তে বেশ ভালো অবস্থানে আছে বলে মনে করেন , সাকিব।

উল্টোদিকে ভারতের রক্ষণ কিছুটা ভঙ্গুর অবস্থানে আছে।

“ভারতের একটা দুর্বল দিক তাদের রক্ষণভাগ, মূল ডিফেন্ডার সান্দেশ খেলতে পারছেন না, ওমানের বিপক্ষে ভারত লিড নিয়েও ডিফেন্সের দুর্বলতার কারণে ধরে রাখতে পারেনি,” বলছিলেন সাদমান সাকিব।

ভারতের দুর্বল রক্ষণ ও বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড লাইন দুর্বল।

কিন্তু একদিক থেকে ভারত এগিয়ে সেটা হলো ভারতের ফরোয়ার্ড।

সুনীল ছেত্রী দক্ষিণ এশিয়ারই সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন।

১১২ ম্যাচে ৭২টি গোল করেছেন এই ফরোয়ার্ড।

বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের অন্যতম বড় লক্ষ্য থাকবে সুনীল ছেত্রীকে আটকে দেয়া।

সুনীল ছেত্রী ছাড়াও বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের সামলাতে হবে মোহাম্মদ আশিক কুরুনিয়ান, মানবীর সিংদের আক্রমণ।

জয়ের জন্য মূলত ভারতের রক্ষণের দুর্বলতাকে কাজে লাগানোর কথা আলাদাভাবে বলেছেন ফুটবল সাংবাদিক সাদমান সাকিব।

“মূলত নাবিব নেওয়াজ জীবনদের ফিনিশিংয়ের ওপর নির্ভর করবে এই ম্যাচে কতটা সাফল্য পাবে বাংলাদেশ, কাতারের বিপক্ষে ম্যাচে রক্ষণভাগ যে ধরণের খেলা খেলেছে সেটা খেলতে পারলেও, জয় যদি নাও পায়, অন্তত ড্র পেতে পারে বাংলাদেশ।”

বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ইনজুরিও আছে। মূল সেন্টার ব্যাক তপু বর্মন, মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ ও সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার মাশুক মিয়া জনি দলে নেই।

ফুটবল, বাংলাদেশ, ভারত
গুরপ্রীত সিং সান্ধু, কাতারের বিপক্ষে ২৭টি গোল ঠেকিয়েছেন

তবে নাবিব নেওয়াজ জীবন ও সোহেল রানা হতে পারেন বাংলাদেশের আক্রমণের বড় হাতিয়ার।

ভারতের অন্যতম বড় হাতিয়ার তাদের গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধু, যিনি নরওয়ের ক্লাব স্টায়েবেকের হয়ে খেলেন।

গুরপ্রীত কাতারের বিপক্ষে ম্যাচে মোট ২৭টি শট ঠেকিয়েছেন।

মুখোমুখি পরিসংখ্যান

বাংলাদেশ ও ভারত এর আগে ২৮টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল।

যেখানে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচে জয় পায়।

ভারত জয় পায় ১৫টি ম্যাচে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মোট ১১টি ম্যাচ ড্র হয়।

বাংলাদেশ যে দুটো পুরোদস্তুর আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারতকে হারায় তার একটি ১৯৯১ সালে।

১৯৯১ সালে কলম্বো সাফ গেমসে ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো জয় পায় বাংলাদেশ।

কলম্বোর মাঠে সেদিন জোড়া গোল করেছিলেন রিজভী করিম রুমি।

২-১ গোলে ভারত হেরে যায়।

১৯৯৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ান ফেডারেশন গেমসের ফাইনালে বাংলাদেশ ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে স্বর্ণপদক জেতে।

২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে মতিউর রহমান মুন্নার গোলে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। এটি ছিল ‘গোল্ডেন গোল’। এই গোলের আগে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র ছিল ম্যাচটি।