আজীবন সম্মাননা পেয়ে যা বললেন আনোয়ারা

‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’-এ যৌথভাবে রাইসুল ইসলাম আসাদের সঙ্গে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন আনোয়ারা বেগম। প্রবীণ এই অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ

আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পাচ্ছেন। কেমন লাগছে?
এটা একজন শিল্পীর জন্য অনেক বড় পাওয়া। প্রত্যেক শিল্পীরই এই পুরস্কার পাওয়ার একটা স্বপ্ন থাকে।

আমারও স্বপ্ন ছিল। এবার পূরণ হতে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই। তিনি সব সময় শিল্পীদের ভালোবেসে পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সরকার শিল্পীদের কল্যাণে অনেক পদক্ষেপ নিচ্ছে, এটা চলচ্চিত্রের জন্য সুসংবাদ।একটা সময় তো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনিয়মিত হয়ে গিয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটাকে নিয়মিত করেছেন। হয়তো পুরস্কার নিয়মিত না হলে জীবদ্দশায় আমি এই সম্মাননা পেতাম না।

আগে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন, আগের পুরস্কার আর এবারের পুরস্কারের মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পান?
একজন শিল্পী জাতীয় পুরস্কার পান তাঁর অভিনীত চরিত্রটি সঠিকভাবে পর্দায় উপস্থাপন করার জন্য। সেই চরিত্রটি ভালোভাবে আত্মস্থ করতে পারলেই শিল্পী সফল হন। জুরি বোর্ডের নজর কাড়েন এবং কাঙ্ক্ষিত পুরস্কার পান। আর একজন শিল্পী আজীবন সম্মননা পান অভিনয় ক্ষেত্রে তাঁর অবদান রাখার জন্য।

আমি আজীবন সম্মাননা পেয়ে খুব গর্ববোধ করছি। এখন মাথা উঁচু করে বলতে পারব, না, চলচ্চিত্রে অবদান রাখতে পেরেছি আমি! সরকারও আমাকে মূল্যায়ন করেছে।

চলচ্চিত্রে এখন আপনাকে পাওয়া যায় না বললেই চলে। কেন দূরে আছেন?
এখন বয়স হয়েছে। আগের মতো পরিশ্রম করতে পারি না। তার পরও যে চরিত্রগুলোতে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে সেগুলো খুব বেশি পছন্দও হয় না। তবে চলচ্চিত্রের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। তাঁরা আমার সুখ-দুঃখে সব সময় পাশে থাকেন।

এখনকার চলচ্চিত্র কী দেখেন?
বাসায় অবসর সময়ে টিভি দেখি। তখন চ্যানেল পরিবর্তন করতে করতে কোনো ছবি চোখে পড়লে দেখি। আমি মনে-প্রাণে চলচ্চিত্রের মানুষ। চলচ্চিত্রের প্রতি মায়া সব সময়ই আছে। হয়তো আগের মতো অভিনয় করছি না। তবে ভালোবাসা কমেনি।

একজন ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী হওয়ার জন্য নতুনদের কী পরামর্শ দেবেন?
কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জিং চরিত্রগুলো বেছে নিতে হবে। নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা থাকতে হবে। পাশাপাশি পরিচালক ও সহকর্মীদের প্রতিও দায়িত্ববান হতে হবে। আমি পুরো ক্যারিয়ারে কখনো কোনো নির্মাতার শিডিউল নষ্ট করেছি এমন নজির নেই। কোনো সহশিল্পীর মনে কষ্ট দিয়েছি এমনটাও কেউ বলতে পারবেন না। একজন ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রীর এই গুণগুলো থাকা খুবই দরকার।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ