আগুনে পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু : বাড়ি মালিককে আসামি করে মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় আগুনে এক পরিবারের পাঁচজন মৃত্যুর ঘটনায় বাড়ি মালিককে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। নিহত মকবুল হোসেনের মা খোশেদা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। গ্যাস পাইপের লিকেজ মেরামত না করে দেওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বুধবার দুপুর আড়াইটায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।

আশুগঞ্জ থানার ওসি মো. আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, মুকবুল হোসেনের ভাড়া বাড়ির মালিক মো. আলাই মিয়া, তার স্ত্রী সালমা আক্তার, দুই ছেলে মো. মাহফুজ, মো. আলম ও বাড়ির দারোয়ান মো. কবির মিয়া। তবে বিকেল নাগাদ তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে তদন্ত কমিটি এখনো ঘটনার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলার মতো জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। গ্যাস পাইপের লিকেজসহ যে কারণগুলো সামনে এসেছে সেগুলোর প্রমাণ তারা সংগ্রহ করছেন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরো কয়েকদিন সময় নিবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

উপজেলার চরচারতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফাইজুর রহমান বলেন, ‘আমার বাড়ি থেকে মকবুলের বাসার দূরত্ব আনুমানিক ১০০ গজ। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেও মকবুল তার এক ছেলেকে নিয়ে আমার বাসায় আসে। তাদের ঘরে আগুনের খবর পেয়ে ছুটে যাই। এভাবে একটি পরিবার শেষ হয়ে যাবে সেটা ভাবতেও পারছি না। ’

উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনাটি মর্মান্তিক। আর কখনো এমন ঘটনার মুখোমুখি হইনি। আমাদের পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ। শরীফপুর গ্রামের ঈদগাহ কবরস্থানে তাদের পাঁচজনকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। ’

২৩ ফেব্রুয়ারি আশুগঞ্জ উপজেলার শরীয়তনগর এলাকার আলাই মিয়ার মালিকানাধীন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভাড়াটিয়া মকবুল হোসেনসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়। সেদিন শিশু আরিফ কয়েল ধরাতে গেলে আগুনের সূত্রপাত হয়। একে একে মকবুল, তার স্ত্রী ও দুই সন্তান মারা যান। মকবুলের অগ্নিদগ্ধ স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করেন।

তবে ঘটনার পর বাড়ির মালিকের ছেলে মো. মাহফুজ গ্যাস লাইনে কোনো ধরণের লিকেজ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, গ্যাসের লাইন কিংবা চুলায় কোনো সমস্যা ছিলো না। ১৫ দিন পর পর এসবের পরীক্ষা করানো হয়।

আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ও তদন্ত কমিটির সদস্য মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ঘরে গ্যাস জমে ছিলো সেটা বোঝা গেছে। তবে লাইন থেকে নাকি চুলার সমস্যা থেকে গ্যাস নির্গত হয় সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের থাকার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। ’

তদন্ত কমিটির প্রধান ও আশুগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল হক বুধবার বিকেলে জানান, গ্যাস পাইপ লাইনে ত্রুটির বিয়ষটিও তদন্ত হচ্ছে। এসব বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্টে বিস্তারিত উল্লেখ করা হবে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ