আওয়ামীপন্থীতে অন্তঃকোন্দল, ফুরফুরে বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আজ। নির্বাচনে ১৫টি পদের বিপরীতে আওয়ামীপন্থী-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ (হলুদ প্যানেল) এবং বিএনপি-জামায়াতপন্থী বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক গ্রুপের (সাদা প্যানেল) ৩০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, নির্বাচনে যে ত্রিশজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা প্রত্যেকেই ফ্রেশ ইমেজধারী। তবে এ বছর আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ভোটার সংখ্যা বিএনপিপন্থীদের তুলনায় বেশি হলেও দলের সদস্যদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল তাদের হেরে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘কাগজে-কলমে আমাদের ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭শর কাছাকাছি। তবে দলে অনেক সদস্য রয়েছেন যারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধিকেই বড় করে দেখেন। এ ছাড়াও সংগঠনে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যাও কম নয়। যার ফলাফল বিগত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্বাচনে স্পষ্ট হয়েছে। আর এই সুযোগটাই নেবে সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা।’ গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিয়ারিং কমিটির নির্বাচনে হলুদ প্যানেলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। একই চেতনায় বিশ্বাসী হলেও তারা দুটি গ্রুপে নির্বাচনে অংশ নেন। এতে করে সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পদে হেরে যায় হলুদ প্যানেলের প্রার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৩ এপ্রিল প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন প্রার্থীরা। প্রার্থীরা তাদের সফলতা ও ভোটারদের চাওয়া-পাওয়া পূরণের আশ্বাস দিয়ে গতকাল পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।

জুবেরী ভবনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শিক্ষকরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এবার ভোটার রয়েছেন এক হাজার ১৩০জন। নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

হলুদ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে বাংলা বিভাগের খন্দকার ফরহাদ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের আশরাফুল ইসলাম খান প্রার্থী হয়েছেন। বিপরীতে রয়েছেন সাদা প্যানেলের সভাপতি পদে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাইফুল ইসলাম ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পরিসংখ্যান বিভাগের আমিনুল হক।

হলুদ প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদে শিক্ষক সাইয়েদুজ্জামানের বিপরীতে রয়েছেন সাদা প্যানেলের জে এ এম সকিলউর রহমান (শাহীন), যুগ্ম-সম্পাদক পদে মোজাম্মেল হোসেন বকুলের বিপরীতে মুহা. আ. হামিদ এবং কোষাধ্যক্ষ পদে রেজিনা লাজের বিপরীতে সাইফুল ইসলাম। এ ছাড়াও সদস্য পদে দশজন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

সাইফুল ইসলাম ফারুকি বলেন, ‘শিক্ষকদের মধ্যে আমাদের প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। প্রচারণার সময়ে আমরা ভোটারদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। জয়ী হলে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, গবেষণা ও ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য কাজ করবো।

খন্দকার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সদস্যদের মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। আমরা সেগুলো দূর করে সবাইকে এক প্লাটফরমে নিয়ে আসতে পেরেছি বলে মনে করি। নির্বাচনে জয়ী হলে শিক্ষকদের বন্ধ থাকা ইনক্রিমেন্ট চালু করা, সহজ শর্তে আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করাসহ শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে আমরা কাজ করবো।’

নির্বাচনে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম হামিদুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের জন্য সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। শিক্ষক সমিতির নির্বাচন প্রক্রিয়া অনেক স্বচ্ছ। আশা করছি নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলকভাবে আগামীকাল (আজ) নির্বাচন শেষ হবে।’

স/শা