‘আইএমএফের শর্ত পূরণে সময় চেয়েছে বাংলাদেশ’

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশের রিজার্ভ সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থার ঋণ নিয়ে কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম, আইএমএফের শর্ত পূরণে সময় চেয়েছে বাংলাদেশ। এতে বলা হয়েছে, আইএমএফ যেসব শর্তে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছিল, সেগুলো থেকে তিনটি বড় শর্ত শিথিল করতে সম্মত হয়েছে সংস্থাটি।

এসব শর্ত হলো স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নির্দিষ্ট রাখা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই শর্তগুলো শিথিল করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। একই সাথে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য সময় চেয়েও প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে আইএমএফ।

বাংলাদেশকে আইএমএফ যে ঋণ দিয়েছে তার দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফকে যেসব শর্ত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যা কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে তা যাচাই করতে একটি মিশন এসেছে ঢাকায়।

সেসব শর্তের বেশিরভাগই বাস্তবায়ন করা হলেও রিজার্ভের মজুদ, রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য ফর্মুলাভিত্তিক মূল্য সমন্বয় পদ্ধতি চালু করতে পারেনি। সরকারের তরফ থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে এসব কাজ শুরুর কথা বলা হয়েছে।

এদিকে, ঢাকায় বুধবার বড় দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ এবং পাল্টাপাল্টি বক্তব্যই সব সংবাদপত্রের প্রধান শিরোনাম হয়েছে। এনিয়ে দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী’।

এ খবরে বলা হয়েছে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তিনি একটি শেষবার্তা দিতে চান। আর সেটি হচ্ছে, আগামী নির্বাচনের শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন।

শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিনে উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ওই সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে তিনি আগামী নির্বাচনেও জনগণের ভোটে শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনেকটা একই শিরোনাম করেছে আরেকটি পত্রিকা মানবজমিন। দৈনিকটির প্রথম পাতার খবর নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন শেখ হাসিনা। এই খবরটিতে বলা হয়েছে, বিএনপিকে শেষ বার্তা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা নির্বাচনী সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।

তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, খেলা হবে বিএনপি’র বিরুদ্ধে। এই অপশক্তির হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি না। তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। আজিমপুর গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছে।

আর বিএনপির আন্দোলনের খবর নিয়ে প্রধান শিরোনাম করেছে নয়া দিগন্ত পত্রিকা। তাদের প্রধান শিরোনাম, সময় থাকতে না সরলে বিতাড়িত হবেন। এই খবরটিতে বলা হয়েছে, নয়াপল্টনে এক বিশাল জনসমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার বিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের মহাযাত্রার সূচনা হিসেবে আগামী ২৮শে অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন।

সেসময় তিনি বলেন, “সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আর থেমে থাকব না। পূজার ছুটির মধ্যে সিদ্ধান্ত নিন, আপনারা কী করবেন। পদত্যাগ করে সসম্মানে সেইফ এক্সিট নেবেন (নিরাপদে সরে যাওয়া) নাকি জনগণ দ্বারা বিতাড়িত হবেন।”

পদত্যাগ না করলে সরকার পতনে ‘গণজাগরণই হবে’ হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই জনসমাবেশের ঘোষণা থেকে আপনি (সরকার) এই ম্যাসেজ নিন যে, আপনারা আর নাই। আবারো রিপিট করছি আমি, মানে মানে পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন এবং একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের খবরের শিরোনাম, সমঝোতা হলে একরকম, নাহলে অন্যরকম প্রস্তুতি!

এই খবরটিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচন নিয়ে দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা হলে একরকম আর না হলে আরেক রকম প্রস্তুতি নেয়া হবে। দুই ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে তফসিল ঘোষণার পথে হাঁটছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

বর্তমানে রাজনৈতিক পরিবেশ নির্বাচনের জন্য অনুকূল কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা সবার দায়িত্ব। আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে, রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব আরও বেশি। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেটা আছে সেটা সমঝোতা হতেও পারে। আবার নাও হতে পারে। তখন পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। ”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকার অবস্থানে অনড় বিএনপি। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে বদ্ধ পরিকর।

ব্যাংক খাত বিষয়ক একটি খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে বণিক বার্তা যেখানে বলা হয়েছে, ডলারের সর্বোচ্চ মজুদের পরও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো স্বস্তিতে নেই।

এই খবরে বলা হয়েছে, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিদেশী হিসাব যা নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট হিসেবে পরিচিত, সেখানে গত এক বছরের ব্যবধানে ডলার স্থিতি বেড়েছে ২৫.৮৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বরের শেষে ব্যাংকগুলোর নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে ডলার স্থিতি ছিল ৬১৭ কোটি ডলারের বেশি।

তবে ডলার ধারণ বাড়লেও তা দেশের আমদানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করায় ভূমিকা রাখতে পারছে না। উল্টো ডলার সংকট বেড়েই চলেছে।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নস্ট্রো অ্যাকাউন্টটি ডলার ধারণ বাড়লেও ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান দায়ের তুলনায় তা বেশ কম। আবার রেমিট্যান্স বা রপ্তানি আয়ের মতো খাত থেকেই খুব বেশি পরিমাণ ডলার দেশে ঢুকছে না। রিজার্ভের সংকটও দিন দিন বাড়ছে। সব মিলিয়ে ডলারের সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না বাংলাদেশ।

অর্থনীতি নিয়ে সমকাল পত্রিকার শেষ পাতার খবর, অর্থনীতিতে সংস্কার জোরদার হবে নির্বাচনের পর। এই খবরটিতে আইএমএফ এর সাথে বৈঠকে থাকা একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে অর্থনীতিতে বড় ধরণের সংস্কারে যেতে চায় না সরকার।

বরং নির্বাচনের পর ব্যাংকের সুদহার বাজারের উপর ছেড়ে দেয়া এবং জ্বালানির দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয়ের মতো পদক্ষেপ সরকার নেবে বলে বাংলাদেশে সফররত আইএমএফ-এর প্রতিনিধি দলকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

একই সাথে সংস্কার কার্যক্রম শুরুর সময়সীমা পিছিয়ে দেয়ারও প্রস্তাবও আইএফএমকে দেয়া হয়েছে। খবরটিতে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, নীতি সুদহার বাড়ানোসহ নানা বিষয় বিবেচনা করে সফররত দলটি নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে আসবে।

দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার শিরোনাম, ‘Govt removes river commission boss’ অর্থাৎ নদীরক্ষা কমিশনের প্রধানকে সরিয়ে দিয়েছে সরকার। এই খবরটিতে বলা হয়েছে, মেয়াদ মাত্র অর্ধেক শেষ হলেও গতকাল নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদের নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।

চাঁদপুরের এক নারী মন্ত্রীকে নিয়ে সমালোচনা করার তিন সপ্তাহ পর তার নিয়োগ আদেশ বাতিলের এই সিদ্ধান্ত আসলো। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ওই নারী মন্ত্রী মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটকে সমর্থন দিয়ে থাকেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক গেজেটে বলা হয়েছে, সরকার ‘জনস্বার্থে’ তার নিয়োগ বাতিল করেছে।

মি. আহমেদকে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এর আগে তিনি পরমাণু শক্তি কমিশনে একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার শিরোনাম, ‘Bangladesh stands firmly with Palestine: PM Hasina,’ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পাশে আছে।

এই খবরটিতে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বুধবার ঢাকায় অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসির ১৪ জন মিশন প্রধানের সাথে বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে ফিলিস্তিনের পাশে আছে।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপের মধ্যে নিহিত। “মুসলিম উম্মাহ যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে, তাহলে ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান করা সম্ভব,” তিনি বলেন।