অ্যাপলের সবচেয়ে শক্তিশালী চিপ

সম্প্রতি ‘এম১ প্রো’ ও ‘এম১ ম্যাক্স’ নামের দুটি নতুন চিপ উন্মোচন করেছে অ্যাপল। প্রতিষ্ঠানটির দাবি ৫৭০০ কোটি ট্রানজিস্টরসংবলিত ‘এম১ ম্যাক্স’ চিপটি এখন পর্যন্ত তাদের নির্মিত সবচেয়ে শক্তিশালী চিপ।

১৮ অক্টোবর অ্যাপল দুটি নতুন ম্যাকবুক প্রো মডেল উন্মোচন করেছে। নতুন মডেলে মিনি এলইডি প্রযুক্তির প্রো-এক্সডিআর ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট ১২০ হার্জ পর্যন্ত হতে পারে; নতুন ডিজাইন এবং ম্যাগসেফ চার্জিং পোর্ট ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি নতুন দুটি মডেলের প্রসেসর চিপও উন্মোচন করেছে তারা। অ্যাপল সিলিকন এম১ প্রো ও এম১ ম্যাক্স বাজারের বাকি সব সিপিইউ ও জিপিইউর চেয়ে কম শক্তি ব্যবহার করে সমান বা তার থেকেও বেশি পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম। ফলে নতুন ম্যাকবুক প্রোকে প্রসেসিং ক্ষমতা, বহনযোগ্যতা, ব্যাটারিলাইফ-একসঙ্গে তিনটি ক্ষেত্রেই হারিয়ে দিতে পারে এমন ল্যাপটপ একটিও নেই।

এম১ প্রোতে থাকছে ১০টি পর্যন্ত সিপিইউ কোর, যার মধ্যে আটটিই শক্তিশালী আর দুটি ব্যাটারিসাশ্রয়ী। জিপিইউ কোর থাকছে ১৬টি পর্যন্ত, সিপিইউ ও জিপিইউ সমন্বিত র‌্যাম থাকছে সর্বোচ্চ ৩২ গিগাবাইট। সিপিইউ ও জিপিইউকে বিশেষায়িত কাজে সাহায্য করার জন্য আছে ১৬ কোরের নিউরাল ইঞ্জিন, যার কাজ মেশিন লার্নিং বা এআই। প্রফেশনাল মানের ভিডিও নিয়ে কাজ করার জন্য প্রো-রেস এনকোডার ও ডিকোডারও থাকছে এতে। সর্বমোট তিন হাজার ৩৭০ কোটি ট্রানজিস্টর আছে এতে, তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫ ন্যানোমিটার প্রযুক্তি, আর সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য থাকছে সিকিউর অনক্লেভ বা টি-২ চিপ। সিপিউ পারফরম্যান্স বর্তমানের রাইজেন ৯ বা ইন্টেল কোর আই৯ ল্যাপটপের চেয়ে সামান্য বেশি, আর জিপিইউ পারফরম্যান্স বলা যায় এনভিডিয়া আরটিএক্স ৩০৬০-এর সমান। যদিও অ্যাপল জিপিইউ গেমিং নয়, ভিডিও তৈরি এবং গ্রাফিকসের কাজের জন্যই প্রস্তুত।

এম১ প্রোর পারফরম্যান্স যদি যথেষ্ট মনে না হয় সে ক্ষেত্রে রয়েছে ‘এম১ ম্যাক্স’। এম১ প্রোর সঙ্গে এটির মূল পার্থক্য, জিপিইউ কোর ১৬-এর জায়গায় ৩২। র‌্যামও পাওয়া যাবে বেশি, সর্বোচ্চ ৬৪ গিগাবাইট। র‌্যামের গতিও এম১ প্রোর দ্বিগুণ, প্রতি সেকেন্ডে ২০০ গিগাবাইটের স্থানে ৪০০ গিগাবাইট। ট্রানজিস্টরের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি। এই চিপের ক্ষমতা সিপিইউতে এম১ প্রোর কাছাকাছি হলেও গ্রাফিকসে এনভিডিয়া আরটিএক্স ৩০৮০-কে ছুঁয়েছে।

এম১ প্রো বা এম১ ম্যাক্সসংবলিত ম্যাকবুক প্রোগুলো বর্তমানের বাকি সব শক্তিশালী ল্যাপটপকে সিপিইউ ও জিপিইউ পাওয়ারে হারিয়ে দিয়েছে বলা যায়, কিছু ক্ষেত্রে ডেস্কটপের সঙ্গেও সেগুলো পাল্লা দিয়ে কাজ করতে সক্ষম। কিন্তু সবচেয়ে বড় উদ্ভাবন চিপগুলো সর্বোচ্চ ৫৫ ওয়াট পর্যন্ত পাওয়ার ব্যবহার করে দৈনন্দিন ব্যবহারে ১০ থেকে ১৫ ওয়াটের বেশি শক্তি খরচ করে না। সেখানে এরূপ পারফরম্যান্সের বাকি সব ল্যাপটপ ২০০ ওয়াট বা ততোধিক শক্তি খরচ করে থাকে। ফলাফল ১১ থেকে ২১ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারিলাইফ পাওয়া যাবে, যা বাকি ল্যাপটপের সর্বোচ্চ সাত ঘণ্টা থেকে বহু দূর এগিয়ে। যদিও সেগুলো কিনতে হলে গুনতে হবে এক হাজার ৮৫০ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ৩৫৯ মার্কিন ডলার পর্যন্ত।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ