অর্থের অভাবে পালিত হয়নি ‘তানোর মুক্ত দিবস’ 

তানোর প্রতিনিধি:

১৩ই ডিসেম্বর ছিল তানোর মুক্ত দিবস। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মুক্তযোদ্ধাদের প্রতি উদাসিনতা ও অর্থের অভাবে দিবসটি পালিত হয়নি।

তানোর থানা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আব্দুল ওহাব শেখ বলেন, আমরা দেশেকে পাকহানাদার বাহিদের ষোসন থেকে মুক্তি পেতে জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছি। আজ আমরা অবহেলিত। দু:খের সঙ্গে বলতে হয় বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পক্ষের সরকার। তার পর দল ক্ষমতায় থেকেও রাজনৈকিত নেতারা আজ আমাদের খবর নেয় না। তানোরে মুক্তযোদ্ধাদের কোন কমিটি নেয়। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তিনি মুক্তি যোদ্ধাদের কমান্ডার। তিনিও কোন দিবসটি নিয়ে ভূমিকা রাখেন না। আমরা বৃদ্ধ ছেলে-মেয়েদের সংসারে থাকতে হয়। একটা অনুষ্ঠান করতে হলে খবচ হয়। আমাদের কাছে অর্থ নেয়। দিবসটি পালিত না হওযায় অনেক মুক্তযোদ্ধা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

১৩ই ডিসেম্বর তানোর মুক্ত দিবস। অর্থের অভাবে দিবসটি আমরা পালন করতে পারলাম না। শুধু আজকের এই দিনে শুধু মনে পড়ছে ১৯৭১ সালের কথা। আমাদের অনেক পরিচিত মুখ পাক হানাদার বাহীনিদের গুলিতে শহীদ হয়েছেন। তাদের স্বরণ করে বর্তমান প্রজন্মকে জানাবো বলে ১৩ই ডিসেম্বরে দিবসটি পালন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা আজ বর্তমান রানৈতিক নেতাদের কাছে মনে হয় শত্রু হয়েছি। এক সরকারী ভাতা ছাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিরা কোন দিবসে আমাদের কেউ সাহায্য করে না।

স্বাধীনতার পক্ষের সরকার ক্ষমতায় থেকেও আজ মনে হচ্ছে আমরা পরাধীন। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের মধ্যে অর্থ সাহায্য তুলে কয়েক বার দিবসটি পালন করেছি। কিন্তু বর্তমানে অনেকে আর অর্থ সাহায্য দেয়না। তাই আমরা দিসবটি পালন করতে পারিনা।

তানোর উপজেলা মুক্তি যোদ্ধা আসাদ বলেন, মুলত অর্থের অভাবে দিসবটি আমরা পালন করতে পারছিনা। স্বাধীনতার পক্ষের সরকার ক্ষমতায় তার পরও আমার অবহেলিত কেন। ক্ষমতাশীল সরকার দলের নেতারা মুক্তি যোদ্ধাদের কোন খবর রাখেনা। উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও এমপি মহাদয় আমাদের কোন সাহায্য করে না। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা দিবসটি পালন করতে পারবো।

গতকাল শুক্রবার মোবাইল ফোনে তানোর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নাসরিন বাবু বলেন, আগের মুক্তিযোদ্ধাদের কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। আমার আগের ইউএনও ভারপ্রাপ্ত হিসাবে কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন। এখন আমি আছি। ১৩ ডিসেম্বর তানোর মুক্ত দিবস এ বিষয়ে আমার জানা নেয়। আমার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা দিবসটি পালতের বিষয়ে কোন যোগাযোগ করে নি।

তানোর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে। তাদের অবহেলা করা হয় এটা সঠিক নয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ ম–জিবর রহমানের ঐতিহাসিক মহান স্বাধীনতার ডাকে তানোর থানার মুক্তিযোদ্ধারা ১৪ই এপ্রিল উপজেলার কামারগাঁ মহারাজার কাচারি বাড়ির সামনে থেকে পাকিস্থানী পতাকায় আগুন লাগিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে পাকিস্থানী সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের এলাকায় তন্য তন্য করে খোজতে থাকে। তাদের ভয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে পড়ে। দুই এক দিন পর পর পাকবাহিনী ও রাজাকারদের উপর অতরর্কৃত হামলা চালায় মুক্তযোদ্ধারা। যুদ্ধ শেষ পর্যায়ে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে পাকহানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা পালিয়ে রাজশাহী শহরে চলে যায়। ১৩ই ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহিনী ও রাজাকার মুক্ত হিসাবে তানোরকে ঘোষনা করা হয়।

স/অ